প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৫
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যখন বলেন যে তাদের ‘সিদ্ধান্তমূলক পর্যায়ে’ পৌঁছেছে, তখন গাজায় হামলা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) একদিনে অন্তত ১০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক, শিশু ও ত্রাণের সন্ধানে বের হওয়া ব্যক্তিরা রয়েছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্র গাজা সিটি ইসরাইলের দখলের লক্ষ্যবস্তু।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের নিকটবর্তী আল-মাওয়াসি এলাকায় সাতজন শিশুসহ বেশ কয়েকজন ত্রাণ খোঁজার সময় ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত হন। ঘনবসতিপূর্ণ এই অঞ্চলে বিমান হামলার ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় খুঁজে বাঁচার চেষ্টা করছেন। খাদ্য ও পানি সরবরাহের অভাব তাদের জীবন সংকটে ফেলেছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, গাজার মানুষরা যেন খাঁচার ভেতরে বন্দি। বিমান হামলা থেকে বাঁচতে তারা চলাফেরা করছেন, কিন্তু হামলা তাদের অনুসরণ করছে। এছাড়া খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহের অভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১৩ জন অনাহারে মারা গেছেন।
সাম্প্রতিক সহায়তা পরিস্থিতি নাজুক। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধাজনিত মৃতের সংখ্যা এখন ৩৬১। এর মধ্যে ২২ আগস্ট থেকে ৮৩ জন মারা গেছেন, যখন গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিশ্চিত হয়। মানবিক সহায়তা পৌঁছানোতে বাধা ও সীমিত ট্রাক সংখ্যা স্থানীয়দের বিপদ বাড়াচ্ছে। গত এক মাসে মানবিক সহায়তার ট্রাক মাত্র ১৫ শতাংশ প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সক্ষম হয়েছে।
ইসরাইলের বিমান হামলা ও জায়নিস্ট বাহিনীর আগ্রাসনে গাজায় জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে, বাসস্থান নষ্ট হচ্ছে, এবং অসহায় ফিলিস্তিনিরা খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিদিনের হামলা জীবনকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
জাতিসংঘ সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়ন সংস্থা (আইপিসি) গাজায় দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা দিয়েছে। তবে নেতানিয়াহু এই প্রতিবেদনের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, এটি ‘পুরোপুরি মিথ্যা’। তিনি দাবি করেছেন যে তাদের অভিযান কেবল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য।
ফিলিস্তিনিরা এখন মানবিক সংকট, খাদ্য ও পানি ঘাটতি এবং বিমান হামলার ভয়ে স্থির জীবনযাপন করতে বাধ্য। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে সহায়তা পৌঁছে দিতে ব্যর্থতা মানবিক বিপর্যয়কে আরও তীব্র করছে।