প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৬
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বেলজিয়াম। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।
প্রেভো জানান, অন্তত ১২টি কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে অধিকৃত অঞ্চলের বসতি থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারি ক্রয়-বিক্রয় নীতির পুনর্মূল্যায়ন। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এ ঘোষণা এমন সময়ে এলো যখন গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি। বেলজিয়াম মনে করে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জুলাই মাসে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ফ্রান্সও জাতিসংঘ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। এরপর একে একে আরও কয়েকটি দেশ একই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তবে কিছু দেশ শর্তসাপেক্ষে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশ। বেলজিয়ামের সিদ্ধান্ত এই তালিকাকে আরও সমৃদ্ধ করল।
বিশ্লেষকদের মতে, বেলজিয়ামের এই ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। বিশেষ করে গাজায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশও শিগগিরই একই পথ অনুসরণ করতে পারে।
বেলজিয়ামের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে শক্তিশালী বার্তা হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে। আগামী অধিবেশনে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রত্যাশা করছে বিশ্ববাসী।