প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১০:৪৫
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ থামছেই না। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছেন অনেকে। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। শুক্রবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে বেসামরিকদের প্রাণহানির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের ভিড় বেড়েছে। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
গাজা সরকারের তথ্যমতে, বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের পরিচালিত বিভিন্ন সহায়তাকেন্দ্রে গত এক মাসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৪৯ জন। নিহতদের অনেকেই খাদ্য সহায়তার অপেক্ষায় ছিলেন। ফলে এসব কেন্দ্র এখন ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।
ইসরাইলি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এক বিবৃতিতে মানবিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর প্রতি সহানুভূতির কোনো জায়গা নেই। এই সহায়তাকে তিনি ইসরাইলের জন্য লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেন।
ইসরাইলের এমন কড়া অবস্থানের কারণে গাজায় সহায়তা প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে উত্তর গাজাগামী করিডোরগুলো। এতে লাখো ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য সহায়তার পথ কার্যত রুদ্ধ হয়ে গেছে। দুই দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে সব ধরনের সহায়তা সরবরাহ।
অন্যদিকে গাজায় আটক ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে বিক্ষোভ করেছেন তাদের পরিবার। তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইল সরকারকে যুদ্ধ বন্ধে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
হামাস ও ইসরাইলের মধ্যকার চলমান এই সংঘাত শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। সেদিন হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরাইলি নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। এর জবাবে ইসরাইল শুরু করে নজিরবিহীন হামলা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮ জন।
এই রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যুদ্ধ বন্ধ ও সহায়তা কার্যক্রম পুনরায় চালুর দাবিতে জোরালো পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছে গাজার সাধারণ মানুষ।