প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১২:৩৬
মধ্যপ্রাচ্যে ফের উত্তেজনার আগুন ছড়িয়েছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার মাধ্যমে। শুক্রবার সকাল থেকে ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান একসঙ্গে ১০০টিরও বেশি ড্রোন ইসরায়েলের দিকে ছুঁড়েছে। এই ড্রোনগুলো ভূপাতিত করতে তৎপর রয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে এসব ড্রোন ইসরায়েলের আকাশে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে, যার আওতায় রাজধানী তেহরানসহ ইরানের একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। একাধিক আবাসিক ভবনেও হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
এই অভিযানে ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতাদের প্রাণহানি ঘটে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি এবং পরমাণু গবেষণার সঙ্গে জড়িত দুই শীর্ষ বিজ্ঞানী ফেরেইদুন আব্বাসি ও মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
এছাড়াও খাতাম আল-আনবিয়া সদর দপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। এ ঘটনায় ইরানের অভ্যন্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে এবং প্রতিশোধমূলক অবস্থান গ্রহণ করেছে দেশটি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জানান, এই হামলার উদ্দেশ্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতাকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় করা। তিনি বলেন, যতক্ষণ না লক্ষ্য অর্জিত হয়, ততক্ষণ এই অভিযান চলবে।
এই সংঘর্ষে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে এই উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে, বিশেষত তেল বাজার ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা-পাল্টা হামলার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ ও কূটনৈতিক উদ্যোগের ওপর। যদি দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে এ পরিস্থিতি বড় ধরনের যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।