প্রকাশ: ৮ জুন ২০২৫, ১১:৫৩
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর টানা দ্বিতীয় দিন বিক্ষোভের অগ্নিগর্ভ ময়দানে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার থেকে নথিহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য আইসিই (ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) অভিযান শুরু হলে সেটি স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসব পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাম্প প্রশাসন ন্যাশনাল গার্ডের দুই হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিক্ষোভে উত্তেজনা ও সহিংসতা বাড়তে থাকায় হোয়াইট হাউজ একটি বিবৃতিতে জানায়, ক্যালিফোর্নিয়ায় অনিয়ন্ত্রিত অনাচার রোধে ট্রাম্প সরকার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আইসিই কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালন করার সময় সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এ কারণে অবৈধ অপরাধীদের বিরুদ্ধে এই অভিযান অপরিহার্য। তবে এই পদক্ষেপ ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের কাছে অসম্মানজনক এবং উস্কানিমূলক হিসেবে অভিহিত হয়েছে। নিউসম টুইটারে উল্লেখ করেন, এই পদক্ষেপ উত্তেজনাকেই বৃদ্ধি করবে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করবে।
শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসের দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের ওপর আতশবাজি নিক্ষেপসহ বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইসিই অভিযানে ৪৪ জন গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এর আগেও চলতি সপ্তাহে এই অভিযানে মোট ১১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইসিই এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের ঘটনা সামাজিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। পুলিশ ও ফেডারেল এজেন্টরা বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে স্থানীয় অনেকেই এই পদক্ষেপকে সরকারী অত্যাচার মনে করছে। এর ফলে শহরে পরিবেশ অতিমাত্রায় উত্তেজিত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিকে কেন্দ্র করে এই ধরনের সংঘর্ষ ভবিষ্যতেও চলতে পারে, কারণ অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মনোভাব দুটি ভিন্নমত পোষণ করে। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটরা নানাভাবে প্রতিবাদ করছে এবং তাদের মতে, এসব পদক্ষেপ মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশ উভয় পক্ষই শান্তি বজায় রাখতে কঠোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও পরিস্থিতি এখনো স্পষ্টভাবে নিয়ন্ত্রণে আসেনি।