প্রকাশ: ৬ মে ২০২৫, ১৫:২৬
কাশ্মীরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর থেকেই অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমাগত চড়ছে। ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় ভারত শুরু থেকেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করে আসছে, যদিও ইসলামাবাদ বারবার বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা দিন দিন বাস্তব হয়ে উঠছে।
ভারতের পদক্ষেপে সীমান্তে সেনাদের মধ্যে প্রতিদিন গুলি বিনিময় হচ্ছে। সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও চালিয়েছে উভয় পক্ষ। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ভারতের অবস্থানকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যা এই বিরোধকে আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও জটিল করে তুলেছে। এ অবস্থায় ভারতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছে ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে গঠিত সংস্থা ওআইসি।
ওআইসি এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযোগ দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। একইসঙ্গে তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে এবং সন্ত্রাসবাদের যেকোনো রূপের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ভারত এই হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে, আটারি সীমান্ত বন্ধ করেছে এবং সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে। জবাবে পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে, আকাশসীমা বন্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের জবাবে এটিকে 'যুদ্ধের ঘোষণা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং কঠোর জবাবের ইঙ্গিত দিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, যদি যুদ্ধ শুরু হয় তবে তারা থামবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং জড়িতদের কঠিন শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তার মতে, প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের রক্ত এখন ফুটছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এখনো পর্যন্ত ভারতের অভিযোগে সুস্পষ্ট প্রমাণ অনুপস্থিত। ফলে আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের পক্ষে সমর্থন আদায় কঠিন হতে পারে। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি যুদ্ধের দিকেই এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। এই সংঘাত যদি সামরিক রূপ নেয়, তবে তার প্রভাব গোটা অঞ্চলের জন্য মারাত্মক হতে পারে।