প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২০
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ভয়াবহ এক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এবং ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ১৩০টিরও বেশি পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে শুধুমাত্র ভারতকে লক্ষ্য করে।
রেলমন্ত্রী আব্বাসি জানিয়েছেন, এসব ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের দিকেই তাক করা আছে এবং এগুলো এমনি এমনি সাজিয়ে রাখা হয়নি। তাঁর এ ধরনের মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের নেতাদের এমন বক্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে। এতে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।
পাকিস্তানের সামরিক নীতিমালা ‘ফুল স্পেকট্রাম ডিটারেন্স’ অনুযায়ী, ভারতের যেকোনো ধরনের সামরিক আগ্রাসন প্রতিরোধে প্রয়োজনে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ভারতীয় সামরিক নীতির সম্ভাব্য আগ্রাসন ঠেকানো।
অন্যদিকে, ভারতের ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন’ পরিকল্পিত হয়েছে দ্রুতগতির সীমিত সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই দেশের এ বিপরীতমুখী সামরিক কৌশল যে কোনো সময় দ্রুততর সংঘাতের রূপ নিতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে এক প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে। যদিও ভারত এখনো পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ আন্তর্জাতিক মহলের সামনে উপস্থাপন করেনি, অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সমর্থনের অভিযোগ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনার বৃদ্ধি শুধু এই অঞ্চলের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই এক মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে। অতীতে যখনই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, আন্তর্জাতিক মহল শান্তির আহ্বান জানিয়েছে। এবারও জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলো ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যদি সংঘাতের সূত্রপাত হয়, তাহলে তা সীমিত পর্যায়ে না থেকে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ বা ভয়াবহ পারমাণবিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে, যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর।