গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৬০

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ৬০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত চলা হামলায় মৃতের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়, যার মধ্যে রয়েছে একই পরিবারের ১২ জন। আল জাজিরা ও আনাদোলু সংস্থার তথ্যে উঠে এসেছে এই নির্মমতার বিস্তারিত চিত্র।

উত্তর গাজার জাবালিয়ায় একটি বাসভবনে ইসরায়েলি বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন একটি পরিবারের ১২ সদস্য। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স ও চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কায় মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৫১ হাজার ৩৫৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৭ হাজার ২৪৮ জন। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা সংকটে পড়েছে এবং বহু মানুষ এখনও সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না।

এদিকে গত ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক চাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। কিন্তু দুই মাসের মাথায় আবারও হামলা শুরু হয়, যার সূত্রপাত মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর মতানৈক্য নিয়ে। এই নতুন দফায় প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজার ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠী ইতোমধ্যেই বাস্তুহারা হয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। অবরুদ্ধ এই অঞ্চলের প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে বা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। তাদের মতে, এটি একটি সুপরিকল্পিত গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার হওয়া উচিত।

ফিলিস্তিনি নাগরিকরা এখন মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। খাবার, পানি ও চিকিৎসা সংকট চরমে উঠেছে।