বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে নতুন মাইলফলক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে একটি অবাধ্যতামূলক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় আর্জেন্ট এলএনজি প্রতি বছর বাংলাদেশকে ৫০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটি বছরে ২ কোটি ৫০ লাখ টন এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে।
আর্জেন্ট এলএনজি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রশাসনের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এলএনজি রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা গ্রহণ করেন, যা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিবিহীন দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাস রপ্তানি সহজ করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী আর্জেন্ট এলএনজির পোর্ট ফোরশন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে এর কার্গো বাংলাদেশে পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রি করা হবে। এই চুক্তি বাংলাদেশের শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করবে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে এলএনজির সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত। এনার্জি ইনফরমেশন এজেন্সির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে দেশটির এলএনজি রপ্তানি সক্ষমতা দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এই চুক্তিকে দেশের সম্প্রসারিত শিল্প খাতের জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ তার দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি চাহিদা পূরণে এলএনজির ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তবে দামের সংবেদনশীলতা এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে কয়লার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হয়।
এলএনজি আমদানির এই চুক্তি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারকে দীর্ঘমেয়াদে আরও কার্যকর কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার পাশাপাশি গ্লোবাল এলএনজি বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।