সব মামলা থেকে খালাস পাওয়ায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর আজ বৃহস্পতিবার কারামুক্তি পেতে যাচ্ছেন। কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুপুরের দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১৭ বছর কারাগারে কাটানোর পর এই মুক্তি তার এবং তার সমর্থকদের জন্য একটি বড় স্বস্তি।
কারা সূত্র জানায়, আদালত থেকে বাবরের খালাসের নথি এসে পৌঁছেছে। আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ করে আজ দুপুরে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বাতিল করে বাবরকে খালাস দেয়। এই রায়ের পর তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকল না।
বাবরের মুক্তির খবরে নেত্রকোনা ও আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই ঢাকায় এসেছেন। কারাগারের সামনে নেতাকর্মী ও স্বজনরা অবস্থান নিয়ে তার মুক্তির অপেক্ষায় আছেন। কারামুক্তির পর তাকে বরণ করার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।
সমর্থকরা অভিযোগ করছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বাবর। এক সমর্থক বলেন, "আমাদের নেতা নিরপরাধ। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে।" আরেকজন বলেন, "বাবর মাটি ও মানুষের নেতা। তাকে বিনা দোষে ১৭ বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তার মুক্তিতে আমরা আজ আনন্দিত।"
২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তারের পর বাবরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড এবং একটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একে একে মামলাগুলোর আপিলে খালাস পান তিনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর দুর্নীতি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং অন্যান্য মামলার আপিল শুনানিতে বাবর খালাস পান। সর্বশেষ হাইকোর্টের রায় তাকে সব ধরনের মামলার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে।
বাবরের রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য। ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার কর্মজীবনে তিনি নেত্রকোনার জনগণের কাছে একজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
দীর্ঘ ১৭ বছরের কারাবাস বাবরের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তার মুক্তির মধ্য দিয়ে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে মনে করছেন তার সমর্থকরা। মুক্তির পর তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা কী হবে, তা জানতে সবার দৃষ্টি এখন তার দিকে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।