যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় চারটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ৪০ বছর পর্যন্ত জেল, হাজার হাজার ডলার জরিমানা এবং পুনরায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনার সুপারিশ করেছেন ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওই হামলার ঘটনায় গঠিত হাউস সিলেক্ট কমিটি।
সাবেক প্রেসিডেন্টকে বিক্ষোভের প্ররোচনা, যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতারিত করার ষড়যন্ত্র, কংগ্রেসের কাজকে বাধা দেওয়া এবং মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিচার বিভাগে পাঠাতে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিয়েছেন কমিটির ৯ সদস্য।এই কমিটির সাতজন ডেমোক্র্যাট এবং দুইজন রিপাবলিকান। ৬ জানুয়ারি বিক্ষোভ ও হামলার উত্স সম্পর্কে ১৭ মাসের তদন্তের চূড়ান্ত উপসংহারের তৈরি করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য ডেমোক্রেট নেতা রেপ. জেমি রাসকিন বলেন, কমিটি বিশ্বাস করে, ক্যাপিটলে হামলায় যারা জড়িত ছিল, তাদের সহায়তা ও উসকানি দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনার জন্য পর্যাপ্তের চেয়ে বেশি প্রমাণ রয়েছে।
তিনি বলেন, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের সংবিধানের অধীনে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরকে ব্যাহত করতে চেয়েছিলেন বলে কমিটির কাছে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।ট্রাম্প বারবার নিজের বিরুদ্ধ আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বরং দাবি করেছেন, ভোট জালিয়াতির কারণে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরেছেন তিনি। এ ছাড়া কমিটির কাজের সমালোচনা করেছেন এবং এর সদস্যদের ‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত’ বলে অভিহিত করেন।
সোমবার ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের শিকারে পরিণত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আবার হোয়াইট হাউসের জন্য তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, এটা তারা (ডেমোক্রেট) চান না। কারণ তিনি জয়ী হবেন।তিনি ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, জনগণ বুঝতে পেরেছে— ডেমোক্রেটিক ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (ডিবিআই) আমাকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দিচ্ছে। কারণ তারা জানে আমি জিতব এবং আমার বিরুদ্ধে মামলা করার এই পুরো বিষয়টি অভিশংসন করার মতোই ছিল। এটি আমাকে ও রিপাবলিকান পার্টিকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য একটি পক্ষপাতমূলক প্রচেষ্টা।
বিচার বিভাগ কিংবা বিশেষ পরামর্শদাতা জ্যাক স্মিথ অভিযোগ গ্রহণ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়।এক বিবৃতিতে স্মিথ বলেন, আমি স্বাধীনভাবে বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে নেব। তথ্য-প্রমাণ ও আইন অনুযায়ী তদন্ত দ্রুত এগিয়ে যাবে।
সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সুপারিশ করা চারটি অভিযোগের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছে হাউস কমিটি। প্রকৃতপক্ষে, প্রতিবেদনে ১৭টি সুনির্দিষ্ট অনুসন্ধানের মধ্যে ১৫টিতে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে ট্রাম্পের ভূমিকা উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তথ্য-প্রমাণ একটি সন্দেহাতীত এবং সুস্পষ্ট উপসংহারের দিকে নিয়ে গেছে। সেটি হলো ৬ জানুয়ারির হামলার পেছনে মূল কারণ ছিল একজন মানুষ, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে অনেকেই অনুসরণ করেছিলেন। তিনি না থাকলে ৬ জানুয়ারির কোনো ঘটনাই ঘটত না।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।