অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ২৫শে মে ২০২২ ০৬:২৭ অপরাহ্ন
অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী

আর্থিক সংকট মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কার বিপর্যস্ত অর্থ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। বুধবার (২৫ মে) দেশটির প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।


সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী রনিল এখন আন্তর্জাতিক মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ)- এর সঙ্গে বেলআউট নিয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন।


সকালে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে অর্থ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জাতীয় নীতি মন্ত্রী হিসেবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছে শপথ নেন।


মঙ্গলবার (২৪ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিক্রমাসিংহে অর্থনীতির জন্য তার আশু পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী একটি বাজেট পেশ করে তাতে সরকারি ব্যয় কাটছাঁট করা হবে বলে জানান তিনি।


বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কায় অর্থায়ন করার আগে সেখানে একটি নতুন অর্থনৈতিক নীতি কাঠামো প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তার আগে সেখানে নতুন করে কোনো অর্থায়নের পরিকল্পনা নেই তাদের। অপরদিকে বিক্রমাসিংহে জানিয়েছেন, আইএমএফের কাছ থেকে একটি ঋণ প্যাকেজ আশা করছেন তিনি।


শ্রীলঙ্কার সংকট প্রকট হওয়ার আগেই ২০১৯ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) একটি ওয়ার্কিং পেপারে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার জাতীয় ব্যয় তার জাতীয় আয়ের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া দেশটিতে পরিষেবা ও বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদন অপর্যাপ্ত।


২০১৯ সালে দেশটিতে মাহিন্দা রাজাপাকসে সরকার কর কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। সরকারের সেই সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ব্যাপক বিপর্যস্ত প্রভাব ফেলা শুরু করে। এরপর শুরু হয় করোনা মহামারি।


শ্রীলঙ্কার লাভজনক ব্যবসা হলো পর্যটন শিল্প। করোনার কারণে সেই ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়ে। একই সময় প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সও কমে যায়। একসময় দেশটির আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজার ধস নামে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ধারণা অনুযায়ী, গত দুই বছরে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক বাজারে তেলের ঊর্ধ্বমূল্যও দেশটিকে কাবু করে।


শুধু বৈদেশিক ঋণ মোকাবিলা করার জন্য শ্রীলঙ্কার এ বছর ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। যদিও দেশটির বর্তমান বৈদেশিক রিজার্ভ মাত্র ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এ মুদ্রা সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দ্বীপরাষ্ট্রটি ভারত, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, চীন এমনকি বাংলাদেশেরও দ্বারস্থ হয়েছে।