পঞ্চাশের দশক থেকে ফরাসি ক্যাথলিক গির্জায় যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে ২ লাখেরও বেশি শিশু। এমনই এক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই চাঞ্চল্য তৈরি হয় গোটা বিশ্বে। এই ঘটনায় অনুশোচনা প্রকাশ করতে শনিবার (৬ অক্টোবর) ফ্রান্সের লুর্দের গির্জায় হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনায় শামিল হলেন ফরাসি যাজকেরা।
শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের দায় যে গির্জাগুলোর তা সম্প্রতি স্বীকার করে নিয়েছেন যাজকরা। শনিবার লুর্দে অনুশোচনা প্রকাশের জন্য প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ১২০ জন আর্চবিশপ, বিশপ এবং সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে একটি ছবির উন্মোচন করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি ক্রন্দনরত শিশুর মাথা।
ওই ছবিটি গির্জার দেওয়ালে নির্যাতনের ‘স্মৃতি’ হিসেবে রাখা থাকবে। অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের বিশপ কনফারেন্সের মুখপাত্র হিউ দ্য উইলম বলেন, লুর্দের এই জায়গাটিকে আমরা নির্যাতন, নাটক ও হিংসার প্রথম স্মৃতি হিসেবে স্মরণ করতে চাই।
প্রার্থনার পরে একটি অনুষ্ঠানে যাজকেরা স্বীকার করে নিয়েছেন, শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতন একটা ‘রীতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
উল্লেখ্য, গির্জায় শিশুদের যৌন নির্যাতন নিয়ে গত আড়াই বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে গিয়েছে একটি বিশেষ কমিশন। তদন্ত শেষে জমা পড়েছে আড়াই হাজার পাতার রিপোর্ট। গত মাসে রিপোর্ট সামনে আসার পরই তার মুখপাত্রের মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে আক্রান্তদের প্রতি তার সমবেদনা জানান পোপ ফ্রান্সিস।
এই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, অন্তত ৩ হাজার ২০০ জন গির্জার সদস্য শিশুদের যৌন নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন। রিপোর্ট থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, বিষয়টিতে গির্জার পরোক্ষ প্রশ্রয়ও ছিল।
২০১৮ সালে প্রথম বার গির্জার একটি শিশুর নির্যাতনের বিষয়টি সামনে আসে। সেই সময় পোপ ফ্রান্সিস সিদ্ধান্ত নেন, একটি হটলাইন টেলিফোন চালু করার। সেই হটলাইনেই পরবর্তী কয়েক মাসে আসতে থাকে অসংখ্য মেসেজ।
পোপ আরজি জানান, যেন এই ধরনের ঘটনার কোনোভাবেই আর পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। গির্জা যেন সকলের জন্য নিরাপদ এক স্থান হয়ে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিতে হবে ফরাসি ক্যাথলিকদের।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।