ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) কোনো দেশে কোনো পোস্ট ‘অবৈধ’ কিংবা ‘মানহানিকর’ বিবেচিত হলে পৃথিবীর অন্য দেশ থেকেও একই ধরনের পোস্ট ডিলিট করতে হবে ফেইসবুককে। ব্যবহারকারীদের রিপোর্টের অপেক্ষায় না থেকে ফেইসবুকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে খুঁজে এসব কাজ করতে হবে। ইইউর সর্বোচ্চ আদালত থেকে বৃহস্পতিবার এমনই একটি রায় এসেছে।
বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইতিহাসে এটি ‘যুগান্তকারী’ রায়। যদি শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে তবে ফেইসবুক-টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠান বাড়তি ঝামেলায় পড়ে যাবে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ফেইসবুকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই রায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
মামলাটি যে কারণে হয়েছিল: অস্ট্রিয়ান এক রাজনীতিবিদ সম্পর্কে সেদেশের এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী নেতিবাচক মন্তব্য করেন। দেশটির আদালত জানায়, ওই কমেন্ট নারী রাজনীতিবিদ ইভা গ্লাভিস্কনিগ-পাইস্কেকের সম্মান নষ্ট করেছে।
ইইউর আইন অনুযায়ী, ফেইসবুকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের বাজে মন্তব্যের দায় প্রতিষ্ঠানগুলোর ঘাড়ে পড়ে না। বিষয়টি সম্পর্কে রিপোর্ট হওয়ার পর তাদের দায়িত্বের প্রশ্ন আসবে এবং দ্রুততম সময়ে ডিলিট করতে হবে।
এই আইন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর অস্ট্রিয়ার সুপ্রিম কোর্ট ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবারের রায়ে তিনটি বিষয় পরিষ্কার করা হয়েছে:
১. ইইউ’র কোনো দেশের আদালত কোনো পোস্টকে ‘অবৈধ’ বললে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেটি ডিলিট করতে আদেশ দিতে পারবে।
২. একই ধরনের অন্য পোস্টও মুছে ফেলার আদেশ দেয়া হতে পারে।
৩. প্রাসঙ্গিক কোনো আন্তর্জাতিক আইন বা চুক্তি থাকলে মাধ্যমগুলোকে অন্য দেশ থেকেও অবৈধ পোস্ট মুছে ফেলতে হতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, এই রায়ের বিরুদ্ধে ফেইসবুক কোনো আপিল করতে পারবে না। এই রায়ের মানে কী: এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্টিভ পিয়ার্স বলছেন, ‘যদি আদালত বলে এই পোস্টে কোনো ব্যক্তির মানহানি হয়েছে, তাহলে ফেইসবুককে একই ধরনের অন্য পোস্ট, সেটা যে দেশেই হোক না কেন খুঁজে বের করতে হবে।’ ফেইসবুক বলছে, এই রায়ের যুক্তি নেই। কারণ একটি দেশ অন্য দেশের আইন সম্পর্কে এভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।