জুলুম, একটি মারাত্মক কবিরা গুনাহ, আজ বিশ্বজুড়ে এক ভয়াবহ প্রতিযোগিতার রূপ নেয়েছে। দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার সবখানে দৃশ্যমান। ব্যক্তি থেকে শুরু করে গোষ্ঠী এবং রাষ্ট্রযন্ত্র—সকলেই এই জুলুমে লিপ্ত। এমন পরিস্থিতিতে, জালিমরা অন্যের অধিকার হরণ করে নিজেই পতনের দিকে এগিয়ে যায়।
জুলুমের সংজ্ঞায় পড়ে, কারও অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া, বিনা অপরাধে নির্যাতন করা, এবং সম্পদ হরণ করা অন্তর্ভুক্ত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই কাজগুলো অত্যন্ত মারাত্মক। আল্লাহতায়ালা অত্যাচারিত ব্যক্তির আবেদনকে দ্রুত কবুল করেন, যা জালিমদের জন্য ভয়াবহ সংকেত।
দুনিয়ায় জালিমরা সাধারণত নিজেদের ক্ষমতাবান মনে করে, কিন্তু তারা ভুলে যায় যে আল্লাহ সর্বদা তাদের কর্মকাণ্ড দেখছেন। কুরআনে উল্লেখ আছে, জালিমদের কোনো বন্ধু বা সুপারিশকারী থাকবে না। যখন কেয়ামতের দিন তারা আতঙ্কিত হয়ে নিজেদের দোষ স্বীকার করবে, তখন তাদের কোন উপায় থাকবে না।
জালিমদের জন্য আল্লাহ একটি কঠিন শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কুরআনে বলা হয়েছে, “আমি জালিমদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি অগ্নি।” এ শাস্তি থেকে বাঁচতে, জালিমকে তার জুলুমের জন্য ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন। মাজলুমের বদদোয়া আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায় এবং জালিমদের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না—রোজাদারের দোয়া, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া, এবং মাজলুমের দোয়া। তাই জুলুম থেকে বিরত থাকা জরুরি। আল্লাহতায়ালা জুলুমকে নিজের ওপর হারাম করেছেন, এবং তা বান্দাদের জন্যও হারাম করেছেন।
আমাদের উচিত, আমরা যেন পরস্পরের প্রতি জুলুম না করি, কারণ জুলুমের ফল ভয়াবহ। কুরআন আমাদের সতর্ক করে দিয়েছে—“তোমরা জালিমদের প্রতি ঝুঁকে পড়বে না, তাহলে আগুন তোমাদেরও স্পর্শ করবে।”
এই বিষয়গুলো মনে রেখে আমাদের সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জুলুমের এই ধারাবাহিকতা বন্ধ করার জন্য সচেতনতা এবং কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।