নওগাঁয় আমের মুকুলের বিপুল আধিক্য, বাম্পার ফলনের আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন
নওগাঁয় আমের মুকুলের বিপুল আধিক্য, বাম্পার ফলনের আশা

উত্তরের প্রখ্যাত আম উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁতে এবার আমের মুকুলের আধিক্য দেখা গেছে। কৃষকদের মুখে খুশির ঝিলিক, কারণ গত কয়েক বছরে এরকম বিপুল পরিমাণ মুকুল আর কখনও আসেনি। মুকুলের ম-ম ঘ্রাণে জেলা প্রকম্পিত, আর চাষিরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। 


এ বছর আমের মুকুল অনেক বেশি আসায় কৃষিবিদরা আশাবাদী। তারা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারের ফলন গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হবে। বর্তমানে ২০০ হেক্টর জমিতে নতুন আমবাগান হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর বেশি। কৃষকদের হিসাব মতে, ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফলন বাড়তে পারে। 


তবে একদিকে চাষিরা আশাবাদী, অন্যদিকে কিছু উদ্বেগও রয়েছে। প্রকৃতির নিয়মে, এক মৌসুমে ভালো ফলন হলে পরের বছর ফলন কম হয়। গত বছর আমের ফলন কম হওয়ায়, এবার চাষিরা আমের বাম্পার ফলনের জন্য আশাবাদী। বাগানের প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছে। 


তবে ঘন কুয়াশা থাকলেও শীতের তীব্রতা কম হওয়ায় মুকুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম। চাষিরা সতর্কতার সঙ্গে মুকুলের প্রতি নজর রাখছেন এবং ছত্রাকের আক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। 


এদিকে, মুকুলের আসার সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা মাঠে নেমে পড়েছেন। তারা বাগান কিনতে মালিকদের কাছে যাচ্ছেন, তবে বাগান কেনাবেচা এখনো জমে ওঠেনি। তবে মুকুল গুটি হওয়ার পর বাগান কেনাবেচা শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 


নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে, যা গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি। এ বছর ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। 


সাপাহার ও পোরশা উপজেলার বাগানগুলোতে সবচেয়ে বেশি মুকুল এসেছে। সেখানকার গাছগুলোতে আমের মুকুলে ছায়া পড়েছে। কিছু বাগানে শতভাগ গাছে মুকুল এসেছে, আবার কোথাও ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। 


সোহেল রানা, একজন কৃষি উদ্যোক্তা, বলেন, তার বাগানে ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। তিনি আশা করছেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে বাকি গাছগুলোতেও মুকুল আসবে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত আমের জন্য অনুকূল রয়েছে। 


পোরশা উপজেলার আমচাষি হোসেন আলী বলেন, গত বছর শীতের কারণে মুকুল আসতে দেরি হয়েছিল, তবে এবার আগেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবার বাম্পার ফলন হবে, তার বিশ্বাস। 


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জানুয়ারিতে শৈত্যপ্রবাহ হলেও তাপমাত্রা আমের জন্য অনুকূল ছিল। কুয়াশার কারণে মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাই চাষিদের ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।