দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে করোনা টিকা কেনার নামে ২২ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি টিকা আমদানিতে সরবরাহকারী হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মাকে যুক্ত করা হয়। এতে সরকারি ক্রয়বিধি অনুসরণ না করায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশকে বেশি দামে টিকা কিনতে হয়। সরাসরি সেরামের কাছ থেকে কিনলে যে অর্থ সাশ্রয় হতো, তা দিয়ে আরও ৬৮ লাখ টিকা কেনা যেত। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বেক্সিমকো প্রতি ডোজে ৭৭ টাকা লাভ করেছে।
বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) কর্মকর্তা মইদুল ইসলাম দুদকে এই অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে মিলে সালমান এফ রহমান একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে, যা অন্তত ২২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের কারণেই দেশীয় প্রতিষ্ঠান বঙ্গভ্যাক্সের উৎপাদন থমকে যায়।
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, কীভাবে এই অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে। তিনি বলেন, টিকা কেনার চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সরকার যদি সরাসরি সেরাম থেকে টিকা কিনত, তাহলে জনগণকে কম দামে টিকা প্রদান করা যেত। সিন্ডিকেট গঠনের কারণে সাধারণ মানুষকে বেশি মূল্য দিতে হয়েছে।
টিকা কেনার চুক্তি ও দামের গোপনীয়তা নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার এই চুক্তিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করলে জনগণের বিপুল পরিমাণ অর্থ বাঁচত।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে নৌ-পথে পালানোর সময় সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। দুদকের তদন্ত দল শিগগিরই অভিযোগের বিষয়ে আরও তথ্য প্রকাশ করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।