ফারাক্কা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক সমঝোতা ছাড়াই শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই মার্চ ২০২৫ ১২:২৫ অপরাহ্ন
ফারাক্কা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক সমঝোতা ছাড়াই শেষ

ভারতের তৈরি ফারাক্কা বাঁধের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ পানিসঙ্কট ও আকস্মিক বন্যার শিকার হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়া এবং বর্ষায় হঠাৎ বাঁধ খুলে দেওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এই সমস্যার সমাধানে দুই দেশের মধ্যে দুই দিনব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা ছাড়াই তা শেষ হয়েছে।  


বৈঠকে প্রথম দিন গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয় এবং দুই দেশের প্রতিনিধিরা যৌথভাবে পানি পরিমাপ করেন। প্রথম দিনের আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হলেও দ্বিতীয় দিনে সীমান্ত নদীগুলোর বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। এতে শেষ পর্যন্ত বৈঠকের সারসংক্ষেপে কোনো সই হয়নি, যা সমস্যার সমাধানে জটিলতা তৈরি করেছে।  


বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী বৈঠক হয়েছে, তবে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। ভারতীয় প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি এবং বৈঠক শেষে কোনো সংবাদ সম্মেলনও হয়নি।  


দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় প্রধান বিষয় ছিল দুই দেশের মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি, বন্যা প্রতিবেদন এবং সীমান্ত নদীগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা। তবে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে সীমান্ত নদীর বাঁধ সংস্কার নিয়ে মতপার্থক্য থাকায় তা অনুমোদন হয়নি।  


গত বছর সীমান্ত নদীগুলোর তীর ধসে ও বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ এ বছর সেই বাঁধগুলো সংস্কার করতে চাইলেও ভারত এখনো আনুষ্ঠানিক সম্মতি দেয়নি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আরও বিশ্লেষণ করতে চায় বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।  


তথ্য ভাগাভাগির বিষয়ে ভারত সম্মতি জানালেও তা চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফলে বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ কারণে শেষ পর্যন্ত কোনো পক্ষই বৈঠকের সারসংক্ষেপে সই করেনি।  


প্রতিবছর বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞরা গঙ্গা পানি বণ্টন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ফারাক্কা সফরে যান। এ বছর ৪ মার্চ সফরে গিয়ে তারা পানির পরিমাণ পরিমাপ করেন এবং দুই দেশই তুলনামূলক কম পানি পাচ্ছে বলে জানান।  


৬ মার্চ অনুষ্ঠিত বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টন, পানির পরিমাণ ও নদীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রথম দিনে আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হলেও দ্বিতীয় দিনের বৈঠক অনিশ্চয়তায় শেষ হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ভবিষ্যতে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা হতে পারে, তবে এখনই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।