গত বছরের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সংঘর্ষে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম হিরণ এবং তার গাড়ি চালক আক্তার হোসেনের লাশ ৫ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আজ বৃহস্পতিবার তাদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়। হিরণের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আড়–য়াকান্দি ও আক্তারের বাড়ি ভুপতিপুরের পারিবারিক কবরস্থান থেকে তাদের লাশ উত্তোলন করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঝিনাইদহ শহরে জনতা শহিদুল ইসলাম হিরণের বাড়ি ঘেরাও করে। এ সময় হিরণ জনতার উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করলে অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে ক্ষুদ্ধ জনতা হিরণের বাড়ি আগুন ধরিয়ে দেয়, যার ফলে হিরণ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। তাছাড়া, তার গাড়ি চালক আক্তার হোসেনকেও জনতা পিটিয়ে হত্যা করে।
হিরণের হত্যার পর ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় তার লাশ ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে জুলিয়ে রাখা হয়। এই ঘটনাটি ভিডিও ধারণ হয়ে বিশ্বব্যাপী ভাইরাল হয়, যা দেশে এক ধরনের আতংক সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় হিরণের ভাতিজা জিয়াউল আলম এবং আক্তারের ভাই মুক্তার হোসেন পৃথকভাবে দুইটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ২’শ থেকে ৩’শ জনকে আসামী করা হয়। মামলাটি গ্রহণের পর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ রুমনা আফরোজ ঝিনাইদহ সদর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন।
গত বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে ঝিনাইদহ সদর থানার পুলিশ লাশ উত্তোলন করতে উপস্থিত হয়। এই সময় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও ডাক্তারও উপস্থিত ছিলেন। লাশ উত্তোলনের পর তা ময়না তদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতাল পাঠানো হয়।
মামলার বাদী জিয়াউল আলম জানান, তারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আদালতে মামলা করেছেন। তিনি বলেন, "আমরা চাই, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।"
সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মামলায় অজ্ঞাত ২/৩শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, পুলিশ এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে।
ঝিনাইদহের জনতা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সোচ্চার রয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে একটি ভয়াবহ বার্তা দেয়া হয়েছে এবং তারা চায় অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে এবং শীঘ্রই অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। #
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।