বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন দুটি তেলবাহী জাহাজে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক। শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে বিএসসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর বিএসসির জাহাজ ‘বাংলার জ্যোতি’তে আগুন লেগেছিল, এর মাত্র চার দিন পর ৪ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে আগুন লাগে। তিনি বলেন, “আমরা ধারণা করছি, এই ঘটনাগুলি জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলার একটি অপচেষ্টা।”
শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী এবং কোস্ট গার্ডের একাধিক টাগবোট দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। রাত আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে, ঘটনাস্থলে থাকা সাদিক মিয়া (৬০) নামে এক নাবিকের মৃত্যু ঘটে।
কমোডর মাহমুদুল মালেক আরও জানান, আগুন লাগার সময় জাহাজে কোন কার্যক্রম ছিল না। হঠাৎ করে জাহাজের সম্মুখ অংশে একই সময়ে চার জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া ক্রুরা জানান, ঘটনার সময় একটি স্পিডবোটও সরে যেতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, “গ্যাস ফর্ম বা অন্য কোন কারণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি, তাই আমরা সন্দেহ করছি এটি নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড।”
এদিকে, বিএসসির টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে প্রধান করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পর যদি নাশকতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমোডর মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে ১১ হাজার ৫৫ টন অপরিশোধিত তেল ছিল এবং এতে ৪৮ জন ক্রু ও ওয়াচম্যান উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়াও, জরুরি পরিস্থিতির কারণে ৩০ হাজার টনের একটি বিদেশি জাহাজ ভাড়া করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিএসসি প্রতি বছর ১২-১৪ লাখ টন অপরিশোধিত তেল পরিবহন করে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে সকল পক্ষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।