প্রকাশ: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:৩৮
এখন আর কাজ করতে ইচ্ছে করে না। পেশাগত কারণে কাজ করতে বাধ্য আমি। একটা সাধারণ মানুষের চাকরির মতই আমাদের কাজ। কখনো কখনো কারো কাজ থাকে, কারো থাকে না। এখন এই সময়ে এসে শুনছি শো শুরু হয়েছে। সবুজ কচি পাতার মত জেগে উঠেছে আমাদের ইন্ডাষ্ট্রির কাজ। হালকা পাতলা কনসার্ট চলছে, আমি বাদে। ফেসবুকে দেখে ভালো লাগছে খবরগুলো।’
‘মিউজিশিয়ান সাউন্ড লাইটসের মানুষগুলো আবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বিভোর, শিল্পীরা এমনই হয়। অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের স্মৃতি ভুলতে সময় নেয় না। সামান্য আনন্দেই তারা শিল্পী মনের সফলতা খুঁজে পায়। সংগীতের একটা শক্তি আছে। এই শক্তির জানান আমরা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমেই পেয়েছি।’
‘সব চলছে ঠিকঠাক, তবুও কোথাও যেন কিছু নেই। প্রাণশক্তি শিল্পীর আসল শক্তি। শিল্পী পেটের চিন্তা করে না। সংগীতের অমোঘ টানে ফিরে ফিরে আসে প্রতিদিন মানসিকভাবে ক্ষয়ে যাওয়া মানুষগুলো। গত ২২ বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝেছি, এদেশের শিল্পীরা সবসময়ের ক্রান্তিকালীন যোদ্ধা। এরমধ্যে টাউট বাটপার শিল্পীরাও প্রভাবশালী। আপাতত সাধারণ মিউজিশিয়ানদের আনন্দে আমিও আনন্দিত।’
‘আফসোস, ঐতিহ্যগত কারণেই আমাদের মূল জায়গা বাংলা সিনেমার কালজয়ী গানগুলো। জীবিত কিংবা মৃত বরেণ্য গীতিকার সুরকার শিল্পীরা আজ অসহায়। ঠুনকো আইনের কবলে পড়ে জিম্মি হয়েছে কিছু ধান্দাবাজ ভুঁইফোড় কোম্পানির কাছে। যে দু’লাইন গুছিয়ে কথা বলতে পারে না, সে সমস্ত গানের স্বত্ত্বার মালিক। এমন একজন তথাকথিত মালিক একসময় গ্রামীণফোনের প্রকাশ্য মিটিংয়ে জানতে চেয়েছে শুক্রবারের দিন ইন্টারনেট খোলা থাকে কিনা!!!’
‘প্রযুক্তি আর কালাকানুনের কারণে দেশের সমস্ত সেরা গান তাদের কুক্ষিগত। বড় বড় পত্রিকার সাংবাদিক প্লাস গীতিকারদের এক অংশের আধিপত্যবাদী লোভের কারণে পুরোনো শিল্পীদের সমস্ত অধিকার আজ ভুলুন্ঠিত। এ জেনারেশনেও পুরুষ প্রতিবাদী প্রতিষেধক দেখি না। শুধুই আত্মপ্রচারকেন্দ্রিক কেঁচো দেখি চারিদিকে।’
‘জ্ঞানীরা এখন মূর্খদের চামচামি করছে। যদিও ওরা আসলে কখনোই জ্ঞানী ছিল না। এরা মাথা বেচা দামে নিজের জীবন চালিয়েছে। এই সমস্ত সব্যসাচী মোনাফেকগুলো এখন ক্ষমতায় থেকেও আমিত্বে ব্যস্ত।
আজ সফল হচ্ছে, কাল অসহায় হবেই। প্রকৃতির বিচার অবশ্যই ভোগ করতে হবে। কখনো কখনো শাকের চেয়ে মাছ বড় হয়ে যায়, ঢাকতে যাওয়ার অবান্তর চেষ্টায় ভুগতে থাকে মাথা বেঁচে ফেলা ক্লীবগুলো। তবুও অপেক্ষায় আছি, থাকতে হয়।’