ব্রাক্ষ স্কুল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জানুয়ারী ২০২০ ০৫:৫০ অপরাহ্ন
ব্রাক্ষ স্কুল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। ১৮৫৮ সালে ব্রাক্ষ স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) রাজধানী ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্বে জগন্নাথ কলেজ হিসেবে পরিচিত থাকলেও ২০০৫ সালে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। অধ্যাপক ড: এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৮৫৮ (ব্রাক্ষ স্কুল) সালে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশ করার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। এখানে প্রায় ১৮ হাজারের জন ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া।করছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবহিত প্রাক্তন নাম জগন্নাথ কলেজ, এই নামেই বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় জুড়ে পরিচিত ছিল। এটি ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ ছিলো সেসময় । ১৮৭২ সালে এর নাম বদলে ব্রাক্ষ স্কুল থেকে জগন্নাথ স্কুল করা হয়। বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় তার বাবার নামেই জগন্নাথ স্কুলের নামকরণ করেন। 

১৮৮৪ সালে জগন্নাথ স্কুল একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজে ও ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর জগন্নাথ কলেজে পরিণত হয়। এসময় এটিই ছিল ঢাকার উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গ্রন্থাগারের বই পুস্তক, জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সাজাতে জগন্নাথ কলেজ গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বই দান করা হয়। জগন্নাথ কলেজে আই,এ, আই,এসসি, বি,এ (পাস) শ্রেণী ছাড়াও ইংরেজি, দর্শন ও সংস্কৃতি অনার্স এবং ইংরেজিতে মাস্টার্স চালু করা হলেও ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনমিত করা হয় জগন্নাথকে। পুরানো ঢাকার নারী শিক্ষায় বাঁধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে এই সহ শিক্ষা বন্ধ করে দেয়া হয়।

পরে ১৯৪৯ সালে আবার জগন্নাথ কলেজে  স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়।১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ রফিকউদ্দিন (ভাষা শহীদ রফিক) আত্মত্যাগ করেন। তার নামে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভবন রয়েছে। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় কো-এডুকেশন চালু করেন। ১৯৬৮ সালে এটিকে সরকারীকরণ করা হয়, কিন্তু পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারী মর্যাদা লাভ করে। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে এটি জগন্নাথ কলেজ থেকে পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে মোট ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩৬ টি বিভাগের ও ২টি ইন্সিটিউটের মাধ্যমে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ২০শে অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।প্রতিবছর ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব