রাবিতে সান্ধ্যকোর্স বিরোধী আন্দোলন মামলার সব আসামী খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৭:২৫ অপরাহ্ন
রাবিতে সান্ধ্যকোর্স বিরোধী আন্দোলন মামলার সব আসামী খালাস

রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের  (রাবি) ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ‘বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকোর্স’ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রসহ হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকার আসামিদের দোষ প্রমানিত না হওয়ায় বেকুসুর খালাস দিয়ে এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সিরাজী শওকত সালেহীন বলেন, ‘মামলার দুর্বল সাক্ষীর কারণে সকল আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছে। বাদী পক্ষের ২২ জন সাক্ষী ছিলেন। তার মধ্যে শুধু বাদী মামলার পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন। বাকি ২১ জনই মামলার পক্ষে আদালতে শক্তভাবে সাক্ষী দিতে পারেন নি। এজন্য আদালতের বিচারক চার্জশিটে অভিযুক্তদের খালাস দিয়েছেন।’ 

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিল দাবিতে আন্দোলনকারী কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ওপর ওই দিন একটি ছাত্রসংগঠন অতর্কিত হামলা করে। এতে অর্ধশত শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। হামলার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন, একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলে ভাঙচুর চালায়। ঘটনার পরদিন নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও ছাত্রলীগ পৃথকভাবে দু’টি করে মোট ছয়টি মামলা দায়ের করে। যেখানে ১০৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪৭৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ছাত্রলীগ তাদের মামলা তুলে নিলেও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মামলা তুলেনি। ‘নাশকতা, সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা’ দেওয়ার অভিযোগে মতিহার থানা পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকে আসামী করা হয়।

মামলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০১৭ সালের ৭ মে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল হান্নান অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ১৬ নেতাকর্মী, রাবি শাখা ছাত্র শিবিরের তৎকালীন সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

পরে ২৯ মে আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। মামলায় মোট ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। এদিকে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সকলকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সকালে ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান ও সমাবেশ করেছে। ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে দায়েরকৃত ৪ টি মামলার একটির রায় ঘোষণা হলো। আরও তিনটি মামলার কাজ এখনও চলছে। মামলায় খালাস পাওয়াদের একজন বলেন, মামলায় রায়ে আমরা খুশি। আমাদের এই মামলা থেকে খালাস দিয়েছে আদালত। তবে বাকি যে আরো তিনটা মামলা রয়েছে তা থেকে অব্যহতি চাই।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব