রাবিতে ‘সাত পুকুর’ সংস্কারের কাজ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৩রা মে ২০১৯ ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
রাবিতে ‘সাত পুকুর’ সংস্কারের কাজ শুরু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট হলসমূহের আয়োজনে ‘সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প’ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল সংলগ্ন পুকুর পাড়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। উদ্বোধনের পর উপ-উপাচার্য বলেন, ‘হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদ মনে করেছে শিক্ষার্থীদের গোসল করা, সাঁতার কাটা এবং পুকুরগুলোকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন করার জন্য একটা প্রকল্প নেয়া প্রয়োজন। তাঁরা উপাচার্য মহাদয় বরাবর আবেদন জানিয়েছিল। উপাচার্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছিল। এই কমিটি কৃষি প্রকল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প’ পরিচালনা করছে। এটিতে সহযোগিতা করছে কৃষি প্রকল্প ও ফিশারিজ বিভাগ। এখানে পুকুরের পাড় বেধে দৃষ্টিনন্দন করা হবে। পুকুরে এমন মাছ দেয়া হবে, যে মাছের বৃদ্ধি গবেষণা করবে ফিশারিজ বিভাগ এবং ছাত্র-শিক্ষক এবং অত্র অ লের লোকজন এখানে গোসল করতে পারবে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এবং পাড়ের পরিবেশ মনোরম করার একটা উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আমরা কাজ শুরু করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখানে ডাস্টবিন দেবো, শেড দেবো, ছাতা দেবো, লাইটের ব্যবস্থা করবো যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে বসে পড়াশুনা করতে পারে। এমন গরমের দিনে গাছের নিচে অথবা শেডের নিচে বসে পড়াশুনা করতে পারে, গল্প করতে পারে আলোচনা করতে পারে। যে ডিসকারসনের জন্য ছাত্ররা লাইন ধরে লাইব্রেরিতে দাঁড়িয়ে থাকে সেই ডিসকারসন আর লাইব্রেরিতে করতে হবে না। ছাত্ররা বসে জলাশয়ের ধারে পড়াশুনা করতে পারবে, যেখানে পদ্মের গাছ থাকবে, পানির ফোয়ারা থাকবে। পরবর্তীতে অন্য পুকুরগুলো সংস্কার করবো।’ শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এই পুকুর সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য এবং ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। বিশেষ করে শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হল সংলগ্ন পুকুর পাড় যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তাতে আগামী দশ বছরে হলের প্রথম ব্লক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এরকম একটা আশঙ্কা থেকেই আমরা এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছি।’

এ সময় শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জুলকার নায়েন বলেন, ‘ছাত্রদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল হলের আশেপাশের পুকুরগুলোর লিজ (ইজারা) বাতিল করে পুকুরকে গোসল উপযোগী করে তোলা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রাধ্যক্ষ পরিষদে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলাম। উপ-উপাচার্যদ্বয় আমাদের দাবির সঙ্গে সম্পৃক্ততা জানিয়ে এর একটি প্রকল্প হাতে নেন। সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে পুকুরগুলোতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। সেই সাথে এই পুুকুরগুলোকে দৃষ্টিনন্দন এবং কীভাবে সৌন্দর্য বর্ধন করা যায়, ছাত্র ও আশেপাশের সকলের গোসল উপযোগী করা যায়, সেই কারণেই আজকের এই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান। এসময় পুকুর পাড়ে যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’ মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল আলিম বলেন, ‘এই প্রকল্প শুরুতে চালু হতে হয়তো সময় লাগবে। সবার সহযোগিতা পেলে একটা সময় এটা যেমন দৃষ্টিনন্দন হবে তেমনি শিক্ষার্থীরা এই পুকুরের পাড়ে বসে পড়াশুনার পাশাপাশি বিনোদনও পাবে।’

এসময় উপ-উপাচার্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শহীদ শামসুজ্জোহা হল, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হল ও মাদার বখ্শ হল প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারি, কৃষি প্রকল্প ও স্টুয়ার্ড শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। ‘সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প’টির আওতায় নেয়া হয়েছে মন্নুজান, রোকেয়া, সোহরাওয়ার্দী ও হবিবুর হল সংলগ্ন পুকুর, বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পুকুর, শেখ রাসেল মডেল স্কুলের সামনের পুকুর এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের সামনের পুকুর। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পুকুরকেই এই প্রকল্পের আওতায় নেয়া হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব