প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল আটটায় একযোগে ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। বিশেষ করে টিএসসিকেন্দ্রের ভোটারদের লাইন এতটাই দীর্ঘ হয়েছে যে তা টিএসসির প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে বাইরে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় থাকলেও কারও মুখে বিরক্তির ছাপ নেই, বরং সবাই আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে আগ্রহী।
ভোটারদের মধ্যে প্রথমবারের অভিজ্ঞতাকে ঘিরে আলাদা উচ্ছ্বাস কাজ করছে। সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমা জানান, গত কয়েকদিন ধরে পুরো ক্যাম্পাস উৎসবমুখর পরিবেশে ছিল। অনেক প্রার্থীর সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। আশা করছেন, যোগ্য প্রার্থীরাই নির্বাচিত হবেন এবং ক্যাম্পাস সংস্কারের কাজ করবেন।
সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী তর্পিতা ইসলাম বলেন, জীবনের প্রথম ভোট দিতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। সকালেই কেন্দ্রে এসে ভোট প্রদান করেছেন। তার আশা, এ ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে।
অন্যদিকে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিফা সানজিদা প্রিয়ন্তী জানান, ক্যাম্পাসে বর্তমানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। তারা রাজনীতিমুক্ত পরিবেশে পড়াশোনা করতে চান এবং আশা করছেন নির্বাচিত নেতারা ইশতেহার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবেন।
এদিকে সকাল থেকে প্রার্থীরাও বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন। ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ছাত্রদল প্যানেলের আবিদুল ইসলাম ও ছাত্রশিবির প্যানেলের আবু সাদিক কায়েম উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে এসে ভোট প্রদান করেন। ভোট দিতে এসে প্রার্থীরা শতভাগ জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বী তানভীর বারী হামীম ও আবু বাকের মজুমদার বলেন, আনন্দদায়ক পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, এ নির্বাচন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করবে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ এবং নারী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন। ২৮টি পদের বিপরীতে লড়ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। ভিপি পদে ৪৫ জন, জিএস পদে ১৯ জন, এজিএস পদে ২৫ জনসহ বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্য পদে শিক্ষার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বছরের পর বছর পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসবে এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়ন হবে—এমনটাই আশা করছেন সবাই।