পটুয়াখালীর মহিপুরে মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের সভাপতিকে অপসারনের দাবীতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি চারণে মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজটি নির্মিত হয়েছে। কলেজের সভাপতি ড. এসএম আনোয়ারা বেগম কলেজ উন্নয়নে কাজে সহযোগিতা করছেন না। উল্টো কলেজের ফান্ডের টাকা দিয়ে ভ্রমণভাতা, যাতায়াত ভাতা, আবাসিক হোটেল ভাড়া, রেস্তোরায় খাবার বিল নিচ্ছে।
এমনকি কুয়াকাটায় ভ্রমণ শেষে ঢাকা ফেরার পথে কলেজের অর্থে বিপুল পরিমান সামুদ্রিক মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক কর্মচারী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অসন্তোস দেখা দিয়েছে। সভাপতির এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ ও অপসারণ দাবী করে গত সোমবার (২২আগষ্ট) বেলা ১১টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। কলাপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এ সাংবাদিক সম্মেলন করে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০০ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজে ড. এসএম আনোয়ারা বেগম গভর্নিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য হন। এর আগে তার স্বামী ড. মাহমুদুর রহমান পাঁচ বছর সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ বছরে কলেজের কোন উন্নয়ন করেনি। কলেজ উন্নয়নে সহযোগিতাও করেনি। তাঁরা থাকেন ঢাকায়। মাঝে মধ্যে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা ভ্রমণে আসেন পরিবার পরিজন নিয়ে। আর তখন এক প্রকার চাপ সৃস্টি করে কলেজ থেকে বিমান ভাড়া, হোটেল ভাড়া, খাবার টাকা, ব্যক্তিগত কেনাকাটা সব খরচই কলেজ থেকে আদায় করে থাকে। সভাপতির এমন অপব্যয় কলেজটিকে আর্থিক সংকটে ফেলে দেয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন আরও বলেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর এক অফিস আদেশে বর্তমান সভাপতি মো. বদিউর রহমান এর মনোনয়ন পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) কে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু গত ১ আগষ্ট ওই আদেশ পরিবর্তন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একই কলেজ পরিদর্শক স্বাক্ষরিত অপর এক অফিস আদেশে দুই বছর মেয়াদে গভর্ণিং বডির সভাপতি পদে অধ্যাপক ড. এসএম আনোয়ারা বেগমকে মনোনয়ন দেয়া হয়। যা শিক্ষা পরিপত্রের অপব্যবহার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, কলেজ প্রতিষ্ঠা থেকে এ পর্যন্ত কলেজের সকল উন্নয়নে মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) কলেজের স্বার্থে সবসময় পাশে ছিলেন। কলেজের স্বার্থে কলেজ থেকে মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) সহ তিনজনের নাম সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এ তালিকায় অধ্যাপক ড. এসএম আনোয়ারা বেগমের নাম ছিলো না। কিন্তু কলেজের দেয়া নামের তালিকা বাদ দিয়ে অধ্যাপক ড. এসএম আনোয়ারা বেগমকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, অধ্যাপক ড. এসএম আনোয়ারা বেগমকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কলেজের উন্নয়নের স্বার্থে মাহবুব উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম)কে গভর্ণিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব না দিলে তারা কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন। এনিয়ে প্রয়োজনে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাঁরা দেখা করে সমস্যার সমাধান চাইবেন।
কলেজ অধ্যক্ষ মো. কালিম উল্লাহ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য। কলেজের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং উন্নয়নের স্বার্থে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি যুক্তি সংগত। এ বিষয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. এসএম আনোয়ারা বেগম মুঠোফোনে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ১ আগষ্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হলেও কলেজ অধ্যক্ষ তাকে অফিসিয়ালি এখনও জানায়নি। কলেজ অধ্যক্ষ অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভুল বুজিয়ে এভাবে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে অধ্যক্ষ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।