যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতসহ চারটি দেশকে কঠোর হুমকি দিয়েছেন। ব্রিকস জোটের সদস্য দেশগুলো, যার মধ্যে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তর্ভুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে এই হুমকি উচ্চারিত হয়েছে। ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি এই দেশগুলো মার্কিন ডলারের বিকল্প হিসেবে কোনো নতুন মুদ্রা চালু করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫০% শুল্ক আরোপ করবে।
ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান গভর্নরস অ্যাসোসিয়েশনে দেওয়া এক বক্তৃতায় ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ব্রিকস দেশগুলো মার্কিন ডলারের প্রভাব কমাতে এবং একটি নতুন মুদ্রা তৈরির পরিকল্পনা করছে। তিনি এও উল্লেখ করেন যে, তার প্রশাসন এই ধরনের পদক্ষেপকে কোনোভাবেই মেনে নেবে না। তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ব্রিকস দেশগুলোর পণ্য আমদানি বন্ধ করতে প্রস্তুত এবং তাদের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে।
ট্রাম্পের এই হুমকির পর ব্রিকস দেশগুলোর পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এর আগেও ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলোর বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যদি এই দেশগুলো নিজস্ব মুদ্রা চালু করে বা ডলার ব্যবহার বর্জন করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর ১০০% শুল্ক বসানো হবে। এবার তিনি সেই শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে ১৫০% করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ট্রাম্পের মতে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনো মুদ্রা ব্যবহার করার চেষ্টা করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়া কোনো বিকল্প থাকবে না। ব্রিকস জোট বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন ডলারের আধিপত্য চ্যালেঞ্জ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিকল্প মুদ্রা চালুর বিষয়ে আলোচনা করে আসছে। এই জোটের সদস্য দেশগুলো বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ভারসাম্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছে।
ট্রাম্পের এই হুমকি বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে ব্রিকস দেশগুলোর পরবর্তী পদক্ষেপই নির্ধারণ করবে যে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের প্রভাব কতটা অটুট থাকবে। এদিকে, ট্রাম্পের এই ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে।
ব্রিকস জোটের দেশগুলো এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া না দিলেও, তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।