গাজীপুরে মাটির নিচে কান্নারত নবজাতক শিশুকে পাওয়া গেলো !

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি , গাজীপুর
প্রকাশিত: বুধবার ১৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ১১:২৫ পূর্বাহ্ন
গাজীপুরে মাটির নিচে কান্নারত নবজাতক শিশুকে পাওয়া গেলো !

গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের শিরিরচালা এলাকায় মাটির নিচে উবু অবস্থায় চাপা দেওয়া এক নবজাতককে কান্নারত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে শেষ পর্যন্ত নবজাতকটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা জানান, সোমবার সামিট ক্যাডেট একাডেমির পেছনের মাঠে শিশুরা খেলতে গিয়ে মাটির নিচ থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পায়। শব্দ বাড়তে থাকলে তারা আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। পরে মাটি খুঁড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটি তখনও জীবিত ছিল এবং তার নাড়ি কাটা হয়নি।  


স্থানীয় স্বপ্না বেগম জানান, শিশুদের চিৎকার শুনে আমরা সেখানে যাই এবং মাটির নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে দেখতে পাই। দ্রুত উদ্ধার করে পরিষ্কার করার পর শিশুটিকে বুকের দুধ পান করানো হয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সে খানিকটা সুস্থ হয়। কিন্তু নবজাতকটির বাবা-মায়ের কোনো সন্ধান মেলেনি। শিশুটির প্রতি যে নিষ্ঠুরতা চালানো হয়েছে তা হৃদয়বিদারক বলে মন্তব্য করেন তিনি।  


জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম জানান, উদ্ধারকারী স্বপ্না বেগম শিশুটিকে সেবা দিয়ে থানায় নিয়ে আসেন। পরে বিষয়টি সমাজসেবা কর্মকর্তাদের জানানো হয়। শিশুটিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তবে রাতেই নবজাতকটি মারা যায়।  


গাজীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজের প্রতি একটি বড় প্রশ্ন রেখে যায়। নবজাতকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় রাতেই মারা যায়। শিশুটির মরদেহ বর্তমানে মর্গে রয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন।  


উদ্ধারের সময় নবজাতকটির কান্না ও জীবনের জন্য লড়াই সবাইকে আবেগপ্রবণ করে তোলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা এই নিষ্ঠুর ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।  


গাজীপুর এলাকায় এরকম ঘটনা বিরল হলেও এই নিষ্ঠুরতার ঘটনা মানুষকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।  


নবজাতকের প্রতি এই অমানবিক আচরণে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এমন অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।  


এই ঘটনার পর গাজীপুরের সাধারণ মানুষ শোকাহত। তারা এমন নিষ্ঠুরতার পুনরাবৃত্তি রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।