করোনায় বরিশালে দর্জি ব্যবসায় ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার ৭ই মে ২০২১ ১২:১৭ অপরাহ্ন
করোনায় বরিশালে দর্জি ব্যবসায় ধস

করোনায় বরিশালে দর্জি ব্যবসায় ধস

নিজস্ব 

প্রতিদিনই উঠা নামা করছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ভয়াবহ এ ভাইরাসে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে বরিশাল নগরীর টেইলার্স ব্যবসায়ও। একেবারে তলানিতে পৌঁছে গেছে এ ব্যবসা। 


বরিশাল টেইলার্স মালিক সূত্রে জানা যায়, নগরীতে প্রায় হাজার খানেক টেইালার্সের দোকান রয়েছে। যা দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনার প্রভাবে বিশাল ধস নেমে এসেছে এ ব্যবসা। এ খাতে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি  কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। আর এই আয় থেকেই চলতো তাদের সংসার। মহামারী করোনার কারনে এখন অভাবে দিন কাটছে তাদের। 


এদিকে দ্বিতীয় ধাপের মধ্যে সরকার লকডাউন শিথিল করলেও কাস্টমারের দেখা মিলছে না দোকান গুলোতে। এতে টেইলার্স মালিক ও কর্মচারীরা হতাশায় ভুগছে। 


খোজ নিয়ে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে বরিশালে লকডাউন শুরু হলে দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে দোকান সংশ্রিষ্ট সকলকেই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। টেইলার্স মালিকেরা মোটামুটি চলতে পারলেও বিপাকে পড়তে হয় দর্জি কারিকরদের।


ঐ সময়টায় অনেক দুর থেকে আসা কারিকররা বরিশাল ছাড়াতে বাধ্য হয়। চলে যায় গ্রাম গঞ্জে। কেউ কেউ পেটের তাগিতে লেবারি কাজ করতে দেখা যায়।


এছাড়া নগরীর ব্যস্ততম এলাকার টেইলার্স গুলোতে কম বেশি কাটিং মাস্টার রয়েছে। দোকান বন্ধ থাকার কারনে তারাও কস্টে জীবন যাবন করছে। কাটিং মাস্টারের সাথে কথা হলে তারা জানান, এই দুর অবস্থার কারনে দোকান বন্ধ ছিলো। এতে ঘর ভাড়া সহ সংসার চালাতে ধার দেনা হয়েছি।


সরকার ১২ রমজান থেকে কম পরিসরে খোলার অনুমতি দিলেকিছুটা সস্তি পাই। তার পর থেকে এভাবে বিধিনিষেধ মেনে দোকান খুললেও কাস্টমার সংকটে পরতে হচ্ছে আমাদের। জেন্স এবং লেডিস শোরুমগুলোতে স্বাভাবিক অবস্থায় যেখানে থ্রিপিচ তৈরি করতে অর্ডার হতো প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা, সার্ট, কোর্ট প্যান্টের অর্ডার আসতো ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এখন সেখানে অর্ডার আসছে চার ভাগের এক ভাগেরও কম। 


নগরীর কার্টপট্টি এলাকার লেডিস দর্জি দোকানের কারিকররা জানান, এমন দুর্যোগে  প্রতিদিন দুই থেকে তিন ছেট জামা পায়জামা সেলাই করি। সপ্তাহ শেষে হিসাব করলে দাড়ায় ১ হাজার থেকে ১২ শ টাকা।


এ দিয়া সংসার চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে।  এছাড়া, নগরীর জেন্স টেইলার্স গুলোতে খোজ নিলে জানা যায় কাটিং মাস্টার,কারিকর, দোকান ভাড়া নিয়ে হতাশায় আছে মালিক পক্ষ ।


সরকারের দিক নির্দেশা মনে দোকান খুলেও কাস্টমার ভীড়ছে কম।তবে একটি সুত্রে জানা যায়,জেন্স টেইলার্সের মালিকেরা বিত্তশালী হওয়ায়।কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাড়তি টাকা দিয়ে সাহায্য সহযোগীতা করছেন বলে জানা যায়। 


বটতলা এলাকার অরনেট ফ্যাশন এ্যান্ড টেইলার্সের সত্তাধিকারী জানান, দর্জিদের কাজের মৌসুম হলো রমজান। এ মাসে কাজের চাপে নির্ঘুম রাত কাটাতে হতো, কিন্তু মহামারী ভাইরাস করোনার কারনে পুরো দর্জি ব্যবসায় ধস নেমে এসেছে।


আর টেইলার্স মালিক সমিতির ত্রান সামগ্রী বিতারন তো দুরের কথা এর কার্যক্রম রয়েছে নিস্ক্রিয়। এমন অবস্থায় সরকারের নির্দেশনা মেনে আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে দোকান খোলা রাখছি। আজকে ১৫ রমজান হতে চলেছে অর্ডার খুবই কম।করোনার ভয়তে  মানুষ এখনও ঘর থেকে বের হচ্ছে না।


এ কারনে স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে।তাই যথাযথ সরকারের কাছে সাহায্য সহযোগীতার আবেদন জানাই। যাতে এ খাতে যারা আছি তারা যেন অসময়ে হারিয়ে না যাই। ব্যবসার এ অবস্থায় টিকে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।