অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে (এফটি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা থাকবে না।"
ড. ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলো নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে এবং জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের। তবে, তিনি মনে করেন যে, বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার সম্ভাবনা নেই, কারণ বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূসের মন্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায় যে আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে না, বরং দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
ড. ইউনূস বলেছেন, "আমার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো ইচ্ছা নেই।" তিনি সরকারের নীতি সংস্কারের দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
তিনি ভারত সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কিছু ঘটনা ঘটেছে, তবে এগুলো ধর্মের ভিত্তিতে নয়, বরং রাজনৈতিক কারণে সংঘটিত হয়েছে।
এ সময়, ড. ইউনূস প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন, বলেছেন যে আমাদের একে অপরের প্রয়োজন এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, এবং বর্তমানে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন। ড. ইউনূসের বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।