পাচার হওয়া ৩০ হাজার কোটি টাকা ফেরানো হয়েছে: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:০৪ অপরাহ্ন
পাচার হওয়া ৩০ হাজার কোটি টাকা ফেরানো হয়েছে: গভর্নর

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে উল্লেখযোগ্য একটি অর্থনৈতিক সংকটের অবসান ঘটেছে, যেখানে ব্যাংক খাতের বাহিরে চলে যাওয়া ৩০ হাজার কোটি টাকা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 


গভর্নর জানান, এই অর্থ পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং গ্রাহকদের আস্থা ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতিতে এ এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি, যা ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।”


গভর্নর মনসুর জানান, এই অর্থ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। তিনি বলেন, “এটি ছিল আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা বিভিন্ন আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করেছি। এর ফলে আমরা সফলভাবে এই অর্থ ফেরত আনতে পেরেছি।”


এ সময় তিনি আরও বলেন, “এটি প্রমাণ করে যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষা বজায় রাখতে এবং গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” 


গভর্নর গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রাহকদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে। আমরা নিশ্চিত করেছি যে, কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পাবেন। আমাদের তহবিল রয়েছে যা এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”


গভর্নর মনসুর আরও উল্লেখ করেন যে, ব্যাংকিং খাত নিয়ে কিছু অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেনি। কোনো ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি যা তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। তবে কিছু ব্যাংক অতি-উৎসাহিত হয়ে হয়তো কিছু ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে। এই বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি।”



গভর্নর মনসুর আরও জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভবিষ্যতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ কারণে ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে।”


এই অর্থ পুনরুদ্ধার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ব্যাংকিং খাতের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা আরও দৃঢ় করবে। এই সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামীতে আরও বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।