ব্যাংকে রাখা অর্থ সুরক্ষিত, ফেরত নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
ব্যাংকে রাখা অর্থ সুরক্ষিত, ফেরত নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই: গভর্নর

 ব্যাংকে জমা রাখা টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, সব আমানতকারীর পাশে সরকার রয়েছে এবং তাদের টাকা সুরক্ষিত রয়েছে। এ লক্ষ্যে ব্যাংক খাতের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।


গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আজ (রোববার) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতকে সুসংগঠিত করতে এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের জন্য আগামী ১০ দিনের মধ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়া ১০টি ব্যাংক নিবিড় তদারকির অধীনে রয়েছে এবং তাদের ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তবে সফল না হলে এসব ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।


গভর্নর আরও জানান, ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সম্প্রতি ১০টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। যদিও ব্যাংকিং কমিশন গঠনের পরিকল্পনা থাকলেও সরকার এখন টাস্কফোর্স গঠনের দিকে ঝুঁকেছে। এই টাস্কফোর্স দুটি প্রধান কাজ করবে—একটি ব্যাংকিং খাতের তদারকি এবং অন্যটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব কার্যক্রম শক্তিশালী করা।


গভর্নর বলেন, “আমরা দুটি টাস্কফোর্স গঠন করতে যাচ্ছি। প্রথমটি ব্যাংকিং খাতের জন্য, যা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের কাজ করবে। আপাতত ১০টি ব্যাংকের ওপর নজর দেওয়া হচ্ছে, তবে পরবর্তীতে ধাপে ধাপে সব ব্যাংকের নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন করা হবে। দ্বিতীয় টাস্কফোর্সটি বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে কাজ করবে।”


তিনি আরও জানান, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বিমার আওতায় হিসাবপ্রতি দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত সুরক্ষিত করেছে। এর ফলে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হলে প্রায় ৯৫ শতাংশ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারী তাদের পুরো টাকা ফেরত পাবেন। তিনি বলেন, "বিশ্বের কোথাও আমানতের ওপর শতভাগ বিমা সুবিধা নেই। বাংলাদেশে বিমার প্রিমিয়াম হার খুবই কম, যা ১০০ টাকার বিপরীতে মাত্র ৮ পয়সা।"


আমানত ফেরত দেওয়ার সক্ষমতা নেই এমন ১০টি ব্যাংকের বিষয়েও গভর্নর কথা বলেন। তিনি বলেন, "এসব ব্যাংকের আমানতকারীদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা তাদের ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছি। তবে যদি সফল না হয়, প্রয়োজনে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।"


গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরো বলেন, "আমরা চাই দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ না হোক। উৎপাদন ও কর্মসংস্থান যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবসময় সচেষ্ট থাকবে।" 


এই সংবাদ সম্মেলনে গভর্নরের দেওয়া বার্তা ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা এবং আমানতকারীদের আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে কাজ করে এই সংকট মোকাবিলা করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন গভর্নর।