বরিশালে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: বুধবার ৩রা জানুয়ারী ২০২৪ ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
বরিশালে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা

বরিশালের মুলাদীতে পূর্বশত্রুতার জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। আজ বুধবার (৩ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।


নিহত মো. রুবেল শাহ (৩৮) টুমচর গ্রামের সেকান্দার শাহের ছেলে এবং বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য নার্গিস বেগমের স্বামী।


বাটামারার হাজী গ্রুপ ও আকন গ্রুপের মধ্যে শান্তিচুক্তির ৫ মাস ১১ দিন পর হত্যার ঘটনা ঘটল। টুমচর গ্রামের আকন গ্রুপের লোকজন শান্তিচুক্তির শর্ত ভেঙে মোকছেদ আকন, মুরাদ হোসেন ফারুকের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে রুবেল শাহকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনেরা।


রুবেল শাহ বাটামারার হাজী গ্রুপের লোক ছিলেন এবং সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর লাঙল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছিলেন। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মো. আমিনুল হক কবিরের ঈগল প্রতীকের লোক ছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে পুলিশের দাবি, এটা নির্বাচনী সহিংসতা নয়, হাজী ও আকন গ্রুপের দ্বন্দ্বে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।


নিহতের স্ত্রী নার্গিস বেগম বলেন, রুবেল নরসিংদী জেলায় বিরিয়ানির ব্যবসা করতেন। সংসদ নির্বাচনে জাপা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে তিন দিন আগে বাড়িতে আসেন। আজ সকালে রুবেল বাড়ি থেকে জাগরনী বাজারে যাওয়ার পথে মোকছেদ আকনের বাড়ির সামনে পৌঁছালে লোকমান হোসেন, মুরাদ হোসেন ফারুক, রফিক সরদার, আব্বাস ব্যাপারী, মনির সরদার, আ. রাজ্জাক, দুলাল হাওলাদারসহ ৩০-৩৫ জন লোক রামদা, চাপাতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা রুবেলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে চলে যায়। সংবাদ পেয়ে বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে বরিশাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে খাসেরহাট এলাকায় তার মৃত্যু হয়।


বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দীন অশ্রু বলেন, রুবেল লাঙল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছিলেন। তবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিয়ে কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব কিংবা বাগ্‌বিতণ্ডা হয়নি। বাটামারা ইউনিয়নে হাজী ও আকন গ্রুপের মধ্যে প্রায় ২৩ বছর ধরে বিরোধ ছিল। বরিশাল জেলা পুলিশ ও মুলাদী থানা-পুলিশের মধ্যস্থতায় ২০২৩ সালের ২২ জুলাই ওই দুই পক্ষের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে শান্তিচুক্তি ভেঙে একটি গ্রুপ রুবেলকে কুপিয়ে হত্যা করে থাকতে পারে।


মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় মামলা হয়নি। হত্যায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।