আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে জুয়া-নেশার আড্ডা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১৩ই আগস্ট ২০২২ ১২:৩৭ অপরাহ্ন
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে জুয়া-নেশার আড্ডা!

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর এখন অন্যায়-অবৈধ কার্যকলাপের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রতিবেশীদের মাঝে বেশ অস্বস্তি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘরটি বরাদ্দ পেয়েছেন মো. ফারুক শেখ নামে এক ব্যক্তি। তার বাবা পাশের গোবিন্দপুর গ্রাম নিবাসী মো. জিন্নাহ শেখ একজন প্রতিষ্ঠিত কৃষক। তিনি ২৫ থেকে ৩০ বিঘা কৃষি জমির মালিক। বাড়িতে তিন তলা ভিতের ওপর একটি এক তলা বিল্ডিং রয়েছে তার। এই সচ্ছল বা অবস্থাপন্ন পরিবারের সন্তান ফারুকের দরিদ্রের ঘর পাওয়া নিয়ে এলাকায় বিতর্ক থাকলেও নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে এর অপব্যবহার নিয়ে।


প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঘরটি সারা দিন তালাবদ্ধ থাকে। সন্ধ্যায় ফারুক আসেন জলসার আসর বসাতে। এটি যেন তার বাংলোবাড়ি! প্রায়ই ঘরটিতে বহিরাগত নারী-পুরুষের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। দরজা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে তাস, জুয়া, নেশার আড্ডা চলে। সম্প্রতি এক রাতে ঘরটি থেকে এক নারীসহ ফারুক ও তার সহযোগীদের আটক করেন এলাকাবাসী। পরে ওই নারীকে তার অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও কৌশলে লাপাত্তা হয়ে যান ফারুক ও তার সহযোগীরা।


প্রতিবেশী রিনা বেগম বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের এ ইউনিটে মোট চারটি ঘর রয়েছে। এর একটিতে ফারুক অপর তিনটিতে আমিসহ অন্যরা বসবাস করছি। কিন্তু ফারুকের কারণে বর্তমানে আমাদের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। বহিরাগত নারী-পুরুষের আনাগোনায় লজ্জাজনক অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়। ঘরের ভেতর থেকে নেশাজাত দ্রব্যের গন্ধ ভেসে আসে। বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে থাকতে হচ্ছে।’


এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফারুক শেখের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়াও তিনি এলাকায় না থাকায় এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।


এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. সেলিম মোল্লা ওই ঘর থেকে বহিরাগত নারী উদ্ধারের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ‘ফারুকের কিছু ভুলত্রুটি আছে। এ নিয়ে আপনাদের কিছু করার দরকার নেই। নম্বর দিয়ে যান ফারুককে যোগাযোগ করতে বলব।’


ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন নবাব বলেন, ‘আমার এলাকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে এলাকার কেউ ফারুককে ভালো বলে না, সেটা শোনা যায়। আপনারা আশপাশে খোঁজ নেন, সব জানতে পারবেন।’


এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘কিছু অভিযোগের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনারকে (এসি ল্যান্ড) তদন্তের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’