বরগুনার তালতলীতে ২০ বছর পূর্বে মারা যাওয়া সুইখেফ্রু নামের এক রাখাইন নারীকে দিয়ে দলিল করায় একটি প্রতারক চক্র। এঘটনায় থানায় একটি মামলা করে সুইখে ফ্রু’র পরিবার। এতে চান থান(৫৪) ও নিমং(৪৫) নামের দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়,উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের মৃত চিনিও’র মেয়ে সুইখেফ্রু নামের এক রাখাইন নারী ২০ বছর পূর্বে মারা যায়। কিন্তু প্রতারক চক্রের সহযোগিতায় তাকে জীবিত দেখিয়ে ঔ এলাকার চান থান(৫৪) নিজ নামে পাওয়ার অব এ্যাটর্ণি নেয়। চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বরে সুইখে ফ্রু নামের পাওয়ার অব এ্যাটণি ক্ষমতা বলে অজ্ঞাত এক মহিলাকে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে হাজির করিয়ে চান থান নিজের নামে জাল দলিল করেন। সেখানে নিমং নামের এক রাখাইন দলিলের পরিচিত হয়।
বিষয়টি সুইখে ফ্রু’র ভাই মৃত্যু মংয়েনসে’র মেয়ে খেনচান জানতে পেয়ে আমতলী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে খোঁজাখুজি করেন। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর দলিলের সহি-মহরের নকল উঠায়। সেখানে চান থান ৪৪ নং বড়বগী মৌজার ৫৪ টি দাগ থেকে মোট ১৩.২৮ একর জমির দলিল নেয় যেখানে দলিল দাদাতার ঠিকানা দেওয়া হয় নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নামিশেপাড়ায়। যাহার দলিল নং ৪৯৯২/২১।
সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সুইখে ফ্রু’র যে জন্ম সনদ জমা দেওয়া হয় সেটিও জাল। নিশানবাড়িয়া ইউপি থেকে নেওয়া জন্ম সনদে যে নাম্বাটি দেওয়া আছে সেটি অনলাইনে সার্চ দিলে অন্য এক মহিলার নাম আসে। দলিলে চিনিময় ওরফে চানিয়’র মেয়ে সুইখেফ্রু নামের এই লোক এই ইউনিয়নে বসবাস করেনি কোনোদিন।
পরে ১ অক্টোবর তালতলী থানায় খেনচান বাদী হয়ে চান থান(৫৪) ও নিমং(৪৫) নামের দুই জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাত আসামী করে একটি জাল-জালিয়াতির মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ চান থান(৫৪) ও নিমং(৪৫) কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যেমে কারাগারে পাঠায়।
মামলার খেনচান বলেন, আমার ফুফু সুইখে ফ্রু পাশবর্তী জেলা পুটয়াখালীর কলাপাড়ার আমখোলাপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহন করেন ও বিগত ২০ বছর আগে মায়ানমার(বার্মা) বসে মারা যায়। মৃত্যুর পরে ওয়ারিশ সূত্রে তার সকল সম্পত্তি আমিসহ আমার পরিবারের সদসরা প্রাপ্ত হয়। কিন্তু চান থান ভুয়া ঠিকানা ও কাগজপত্র দাখিল করে দলিল নেয়। সু-বিচার পাওয়ার জন্য মামলা দায়ের করি।
নামিশেপাড়া আইন শৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি মিস্টার চোচিং মং বলেন, দলিলে চিনিময় ওরফে চানিয়’র মেয়ে সুইখেফ্রু নামে দাতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। সে কোনো দিনই অত্রপাড়াতে বসবাস করেনি এবং ছিলো না।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, থানায় একটি জালজালিয়াতির মামলা হয়েছে। এতে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তাদের আদালতের মাধ্যেমে কারাগারের পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।