বিস্কুট চুরির অপরাধে স্কুলছাত্রকে মারধর !

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শনিবার ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০০ অপরাহ্ন
বিস্কুট চুরির অপরাধে স্কুলছাত্রকে মারধর !

৬০ টাকার বিস্কুট চুরির মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মারধরের শিকার অষ্টম শ্রেনির এক স্কুল ছাত্রের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতিমধ্যে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। সামনে আরো টাকা খরচ হলেও, সেই টাকা ফেরত না চাইলেও শিশুটিকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। আর থানা পুলিশ বলছে, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আহত ওই স্কুল ছাত্র আবদুল্লাহ আল জিদান (১৩) বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। সে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আলিমাবাদ ইউনিয়নের গারুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মামুনুর-অর-রশিদ এর ছেলে এবং স্থানীয় আলীমবাদ ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেনির ছাত্র।


আহতের বাবা মামুনুর-অর-রশিদ বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে আজিম নামে এক শিশু কিছু বিস্কুট নিয়ে স্থানীয়দের কাছে ধরা পরে। তখন ওই শিশুটি বিস্কুটগুলো গ্রামরে বান্দেরপাড় (বাধেরপাড়)এলাকায় ইউসুফ ও ফারুক সিকদারের যৌথ দোকান থেকে নিয়েছে বলে জানায়।তখন তাকে বেধে রাখে এবং মারধরের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক চুরির সাথে আমার ছেলে জিদান জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় দোকান মালিক।তবে আমার ছেলের সাথে আজিমের ভালো সম্পর্ক থাকলেও সে চুরির সাথে জড়িত নয়।


তিনি বলেন,এ ঘটনার পর বাসা থেকে আবদুল্লাহ আল জিদানকে লোক পাঠিয়ে ডেকে নিয়ে যায় ইউসুফ সিকদার। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকেও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে চুরির বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার)আজিজুল হক আমাকে মুঠোফোনে জানালে,আমি তাকে দুইদিন পরে বাড়িতে এসে বিচার করার আশ্বাস দেই।তবে এর আগেই পূর্ব শত্রুতার জ্বের ধরে নুরুল আলম টগন নামে এক ব্যক্তি তাকে মারধর করে। তার দেয়া চরের আঘাতে আমার ছেলের ডান চোঁখ ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


এ বিষয়ে দোকান মালিক ইউসুফ সিকদার জানান,গত মাসখানেক ধরে দোকান থেকে বিস্কুক চুরি হচ্ছিলো। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় শিশু আজিমকে ১০ টাকা দামের মিল্ক কোম্পানির ৬ প্যাকেট বিস্কুটসহ স্থানীয়রাই আটক করে তাদের খবর দেয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জিদানের কথা জানায়। জিজ্ঞাসাবদের সময় আজিমের হাত আটকে ধরে তাকেরাখা হয়েছিলো, বেধে রাখা হয়নি। আর জিদানকে মন্দ বলা হলেও মারধর করা হয়নি। তবে নুরুল আলমের সাথে কথা কাটাকাটি করলে তখন সে থাপ্পর দিতে পারে কিন্তু নানাকে ডেকে যখন জিদানকে বুঝিয়ে দেয়া হয় তখন সে স্বাভাবিকও ছিলো। ঘটনার পর মাদ্রাসাতেও গেছে, আর এখন শুনছি তার চোঁখে সমস্যার কথা।


এদিকে ইউপি সদস্য (মেম্বার)আজিজুল হক জানান, ঘটনাটির বিচার অভিভাবকরা করবে এমনটা চেয়ে তিনি জিদানের বাবাকে তাৎক্ষনিক বিষয়টি জানান। তবে সে ঢাকায় থাকায় দুদিন পরে এসে বিচার করবেন বলে জানান। যদিও এরমাঝে নুরুল আলম টগন ছেলেটিকে থাপ্পর দেয়। পরে জানতে পারি তখন সে নাকি চোঁখে আঘাত পেয়েছিলো।


এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনা এখনো থানা পুলিশকে অবগত করেননি, তবে যেহেতু শুনেছেন তাই বিষয়টি সম্পর্কে খোজ নিচ্ছেন এবং তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।