নির্যাতন করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো জঙ্গলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
তানভীর তালুকদার রাকিব
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৭ই জানুয়ারী ২০২১ ০২:২১ অপরাহ্ন
নির্যাতন করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো জঙ্গলে

আজ রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী একটি চক্রের চার বাংলাদেশি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বুধবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।


আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগের সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) শেখ ওমর ফারুক এ তথ্য জানিয়েছেন।


গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. হাবিবুর রহমান (৫১), মামুনুর রশিদ মামুন (৪১), মো. জামাল হোসেন (৪০) ও নাহিদুল ইসলাম পলাশ। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির ২৮টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন দূতাবাস, ব্যাংক ও এজেন্সির ১৯টি সিলমোহর ও ১০টি কম্বোডিয়ার জাল ভিসা উদ্ধার করা হয়েছে।


ওমর ফারুক বলেন, ‘এই চক্রটি বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে সক্রিয়। দীর্ঘদিন থেকে চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পূর্ব থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২-এর ৬, ৭, ৮(২) এবং ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশের ১১(১) ও (গ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ০৯।


অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক আরো বলেন, ‘গমনেচ্ছুদের ইউরোপের বিভিন্ন দেশ (মাল্টা, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি), মিসর, মালদ্বীপ, কম্বোডিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লোক সংগ্রহ করছে। প্রথমে তাদের ভ্রমণ ভিসায় স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়া হতো। এরপর ভুয়া ভিসা দিয়ে পরিবারের


সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হতো। কেউ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। টাকা আদায় শেষে ভারতের দালাল তাদের শ্রীলঙ্কায় পাঠানোর ব্যবস্থা করত। সেখানে তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হতো। সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে এভাবে চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’


ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, তারা এই কাজে ছয় থেকে সাত বছর ধরে করছে। তবে আরো তথ্য পেয়েছি, তারা অন্তত ১০০ লোককে পাচার করেছেন। তবে আমরা এখনও পর্যন্ত সেসব ভিকটিমদের সন্ধান পাইনি।’