বোর্ডের সঙ্গে সাকিবের যেসব দ্বন্দ্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২৮শে অক্টোবর ২০১৯ ১০:২০ অপরাহ্ন
বোর্ডের সঙ্গে সাকিবের যেসব দ্বন্দ্ব

বিভিন্ন ইস্যুতে বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সম্প্রতি ক্রিকেটের ১১ দফা নিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আবারও আলোচনায় বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডার। ইতিহাস বলছে, সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বোর্ডের দ্বন্দ্ব নিয়মিত ঘটনা। এরইমধ্যে বোর্ডের কাছ থেকে কারণ দর্শাও নোটিশ পেয়েছেন তিনি। অভিযোগ, তিনি শর্ত ভঙ্গ করে একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সাথে বিজ্ঞাপনের চুক্তি করেছেন।

এর আগে যেসব দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আলোচনায় ছিলেন সাকিব...

ফটোসেশনে অংশ না নেয়া: ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার আয়োজন করা হয়, সেখানে অংশ নেননি সাকিব আল হাসান। গত ২৯ শে এপ্রিল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এ আয়োজন হয়। যেখানে সাকিব স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু ফটোসেশনে অংশ না নিয়ে বেরিয়ে যান।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেন, "ফটোসেশনে সাকিবের অনুপস্থিতি সত্যিই দুঃখজনক। আমি স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় সাকিবকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কোথায় ও বললো, আমি তো ঢাকায় চলে এসেছি। আপনার বাসায় আসবো রাতে। আমি বললাম, কেন? এখনই তো দেখা হবে। ও বলল, না, আমি বেরিয়ে গেছি। আমি পরে জানতে পারলাম যে সাকিবকে আগেই বলা হয়েছিল আজ দলের ফটোসেশন হবে। জাতীয় দল বিশ্বকাপে যাচ্ছে, তাই সবার সঙ্গে সাকিবকেও ফটোসেশনে দেখার আশা করেছিলাম। কিন্তু সে ছিল না।"

সাকিবকে ছাড়াই বিশ্বকাপ দলের ১৪ ক্রিকেটার অংশ নিয়েছেন ফটোসেশনে, সাকিবের অনুপস্থিতি দলের মধ্যে কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা এমন প্রশ্নে নাজমুল হাসান বলেছিলেন, "আমার মনে হয় দলের অন্যরা এত দিনে ওর এসব ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে! যাহোক, আমি মনে করি এটা ওর জন্যই দুর্ভাগ্য। সাকিবের কপাল খারাপ, আমাদের বিশ্বকাপ দলের ফটোসেশনে সে থাকতে পারলো না। এছাড়া আর কী বলবো।"

টেস্ট খেলতে চান না সাকিব: আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে ও পরে সাকিব আল হাসান অধিনায়কত্ব নিয়ে অনীহা প্রকাশ করে বলেন, এই বিষয়ে বোর্ডের সাথে আলোচনা করার আছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসান পাপন তখন সাংবাদিকদের বলেন যে, টেস্ট খেলতে না চাওয়ার কারণেই সাকিব অধিনায়কত্ব নিয়ে অনীহা প্রকাশ করেন।

"আমরা লক্ষ্য করছি টেস্ট খেলায় বেশ কিছুদিন থেকে তার আগ্রহ নেই। বিশেষ করে দেশের বাইরে টেস্ট খেলার সময় হলে সে ছুটি চায়। হয়তো তার আগ্রহ কম। টেস্ট খেললে তো অধিনায়কত্ব করতেই হবে। অধিনায়ক না হলে তো খেলার বাধ্যবাধকতা নেই।  সম্ভবত এ কারণে অধিনায়কত্ব নিয়ে এমন কথা বলেছে।" ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বরে টেস্ট থেকে বিশ্রাম নিতে ছয় মাসের ছুটি চেয়েছিলেন সাকিব। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তখন তিন মাসের ছুটি মঞ্জুর করেছিল। এজন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলা হয়নি সাকিব আল হাসানের।

অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির কারণে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ: ২০১৪ সালেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসান টেলিভিশন ক্যামেরার দিকে একটি অঙ্গভঙ্গি করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটা নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। এরপর সাকিবকে ৩ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।

২০১৪ সালে ছয় মাসের শাস্তি: বোর্ডের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও আচরণগত সমস্যার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ জুলাই সাকিব আল হাসানকে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের জন্যে নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এছাড়া শাস্তি হিসেবে পরবর্তী দেড় বছর দেশের বাইরে কোনো টুর্নামেন্টে খেলার জন্য এই অলরাউন্ডারকে অনাপত্তিপত্র না দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি।

এরপর আবেদনের প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসানের শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এতে দেশের হয়ে জাতীয় দলে ও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্রে সাকিবের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা তিন মাস কমছে।

২০১৮ সালে আমেরিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীন সাকিব আল হাসান এক ভক্তের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সাকিব তার নিজ ফেসবুকে ব্যাখ্যা দেন।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব