মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) সম্প্রতি দেশটির সীমান্তবর্তী মংডু শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে। তারা জানিয়েছে, এই অভিযানে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর শত শত সৈন্যসহ কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকেও আটক করা হয়েছে।
আরাকান আর্মি জানিয়েছে, তারা রবিবার (৮ ডিসেম্বর) মংডু শহরের জান্তা বাহিনীর শেষ ঘাঁটি দখল করতে সক্ষম হয়েছে। শহরের বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ দীর্ঘ মাসব্যাপী সংঘর্ষের পর আরাকান আর্মির হাতে পতিত হয়। এই ঘাঁটি ছিল একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত এলাকা, যা আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ও রোহিঙ্গা মিলিশিয়া গোষ্ঠীসহ ৭০০-এরও বেশি পুলিশ ও সৈন্য দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল।
আরাকান আর্মি দাবি করেছে যে, তারা জান্তা বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যেই ৫৫ দিন যুদ্ধ করে এই ঘাঁটি দখল করে এবং ওই সময় ৪৫০টিরও বেশি সরকারি সেনা নিহত হয়েছে। এ ছাড়া, তারা প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
ঘাঁটিটি দখলের পর আরাকান আর্মি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদেরও বন্দি করেছে, যার মধ্যে আছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন। তিনি ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করার জন্য পরিচিত। এছাড়া, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় তিনি তাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগেও অভিযুক্ত।
মংডু শহরের দখল নিতে সক্ষম হওয়ার ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এলাকা এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এই নিয়ন্ত্রণের ফলে সীমান্তের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে।
ইরাবতী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে জান্তা বাহিনীর সৈন্যরা বলেছে, তারা দীর্ঘ তিন মাস ধরে ওই ঘাঁটিতে আটকে ছিল এবং তাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ভিডিওতে আরও দেখা যায় যে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন এই সৈন্যদের পরিত্যাগ করেন।
এরপরই আরাকান আর্মি সেই ভিডিওটি পোস্ট করে এবং জানিয়েছে যে, তারা মংডু শহরের এই ঘাঁটিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদও জব্দ করেছে। এই ঘটনা মিয়ানমারের জন্য এক নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে বিদ্রোহীরা তাদের সামরিক শক্তি আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।