টেস্ট সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে নাস্তানুবুদ হল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতেও হেরে গেল তারা। প্রথম টি-টোয়েন্টি বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পরের দু’টি ম্যাচেই হারল বাংলাদেশ।
ম্যাচের পর ওপেনিং ব্যাটার লিটন দাস জানিয়েছেন, বড় বড় ছয় মারার মতো শারীরিক সক্ষমতা নেই বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছেন তারা।
প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৩ তোলে বাংলাদেশ। মাত্র এক রানের জন্য অর্ধশতরান হাতছাড়া করেন লিটন। তবে বাংলাদেশকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন আফিফ হোসাইন (৫০) এবং অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (২২)। উইন্ডিজের হয়ে দু’টি উইকেট নেন হেইডেন ওয়ালশ।
জবাবে কাইল মেয়ার্সের ঝোড়ো ইনিংসের দাপটে দুর্দান্ত শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৮ বলে মেয়ার্সের ৫৫ রানের ইনিংসে ছিল দু’টি চার এবং পাঁচটি ছয়ের মার। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জেতাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন নিকোলাস পুরান। ৩৯ বলে ৭৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। পাঁচটি চার এবং পাঁচটি ছয় রয়েছে তার ইনিংসে। দশ বল বাকি থাকতেই রান তুলে দেয় ক্যারিবিয়ানরা।
ম্যাচের পর লিটন দাস বলেন, “ক্যারিবীয়রা শারীরিকভাবে অনেক শক্তিশালী। আমাদের দলের কেউই ওদের মতো জোরে ছয় মারতে পারবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা চাইলেই বড় মাঠে ছয় মারতে পারেন। আমরা পারি না। তাই চেষ্টা করি চার মারার জন্য। এটাই পার্থক্য।”
বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন দাস মনে করেন, টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার হিটিংয়ের ভূমিকা রয়েছে অনেক। তবে সেই জায়গায় পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
পুরানদের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর লিটন বলেন, ‘ভালো ভালো দলের থেকে আমরা পিছিয়ে টি-টোয়েন্টিতে। আমাদের অনেক কাজ করার আছে। আমরা পাওয়ার ক্রিকেট খেলতে পারি না। অনেকে বলে টি-টোয়েন্টি স্কিলের খেলা, অনেকেই বলে টেকনিকের খেলা। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার হিটিংটা খুব দরকার। আমার মনে হয়, এই বিষয়টাতে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হারে লিটন দুষলেন ব্যাটারদের। তার মতে, পাওয়ার হিটিং আর বড় ছক্কা মারতে না পারার কারণেই এই অবস্থা। কুড়ি ওভারের ফর্ম্যাটটা যেন এখনও আয়ত্বে আনতে পারেনি বাংলাদেশ।
বৃস্পতিবারের ম্যাচের পরে লিটন বলেন, ‘আজকের ম্যাচে হয়তোবা আমাদের বোলারদের প্রয়োগে একটু সমস্যা ছিল। সব বোলার নিজেদের প্রয়োগ ঠিকঠাক করতে পারেনি। আর ওদেরকে ক্রেডিট দিতে হবে যেভাবে ব্যাটিং করেছে, বিশেষ করে পুরান ও মেয়ার্স। খুব ভালো ভালো বলেও ওরা মেরেছে। এই জিনিসটা ওদের প্লাস পয়েন্ট যে, ওরা পাওয়ার ক্রিকেট খেলে, আমরা খেলতে পারি না। আমার মনে হয় এই জিনিসটা কাজ করেছে বোলারদের মাথায় যে, একটু ১৯-২০ হলেই মেরে দিতে পারে।’
লিটন দাস আরও বলেন, ‘তারা জেনেটিক্যালি অনেক পাওয়ারফুল, যেটা আমি না বা আমাদের টিমের কেউই নয়। তারা চাইলেই বড় গ্রাউন্ডসের ওপর দিয়ে ছয় মেরে দিতে পারে যেটা আমি বা আমাদের টিমের কেউই করতে পারবে না। আমরা সব সময় চেষ্টা করি চার মারার জন্য। আপনারা দেখবেন, আমাদের কিন্তু চারই বেশি হয়। ওরা ছয় বেশি মারে। এই পার্থক্যটা সবসময়ই থাকে।’
লিটন দাস আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপ খেলা হবে অস্ট্রেলিয়ায়, সেখানে মাঠ অনেক বড় থাকবে। এই জিনিসটা আমাদের অনেক ভোগাবে। আমরা যত পারব অনুশীলন করব, গেম খেলব, এই জিনিসটা যত তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে পারি, আমরা ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারব বিশ্বকাপে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।