ফাইনালে বরিশালের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৮ অপরাহ্ন
ফাইনালে বরিশালের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা

চলতি বিপিএলের শুরু থেকেই ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে সবচেয়ে ফেবারিট ধরা হচ্ছিল। গ্রুপপর্বে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান নিয়ে এ দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েও সেটির প্রমাণ পাওয়া গেছে। অবশেষে ফেবারিট হিসেবেই প্রথমে সাকিবের বরিশালের পর ফাইনালের টিকিট কাটল ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।


বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৪৩ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে  হারিয়েছে কুমিল্লা। ১৪৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে যদিও প্রথম বলেই উইকেট হারায় কুমিল্লা। শরিফুলের বল বুঝে উঠার আগেই উইকেটকিপার আকবর আলীর হাতে ধরা পড়েন লিটন দাস। তবে কুমিল্লার জন্য এরপরের গল্পটা কেবলই দাপট দেখানোর। 


ক্যারিবীয় কিংবদন্তী সুনীল নারিন মাত্র ১৩ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে বিপিএলের সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েন। এর আগে আসরটির দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ছিল আহমেদ শেহজাদের দখলে। ১৬ বলে সেই রেকর্ড করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ১৬ বলে ৫৭ রান করে মৃত্যুঞ্জয়ের হাতে ক্যাচ এন্ড বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন নারিন। ৬টি ছক্কা ও পাঁচ চারে সাজানো ছিল তার বিধ্বংসী ইনিংসটি। 


নারিন আউট হয়ে গেলেও দলের জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি। ক্যারিবীয় এ ব্যাটারের পর ব্যাট করতে নামা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ২৪ বলে ২২ রান করে বেনি হাওয়েলের বলে আউট হন। তবে এটিই ছিল কুমিল্লার শেষ উইকেট পতন। তারপর দুই বিদেশি রিক্রুট ফ্যাফ ডু প্লেসি এবং মঈন আলী মিলে ৪৩ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় কুমিল্লা। 


এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এর আগে দুইবার ফাইনালে উঠে প্রতিবারই শিরোপা ঘরে তুলেছে নাফিসা কামালের দল। 


এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই ঝড় তোলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দুই ওপেনার উইল জ্যাকস এবং জাকির হোসেন। নাহিদুলের জায়গায় কুমিল্লা একাদশে সুযোগ পাওয়া আবু হায়দার রনি ইনিংসের প্রথম ওভারেই তোপের মুখে পড়লেন । ওভারটির শুরু হয় চার দিয়ে আর শেষও হয় সেই বাউন্ডারিতে। প্রথম ওভার শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ১৩ রান। 


জ্যাকসদের ব্যাটিং ঝড় থামাতে দ্বিতীয় ওভারে কুমিল্লা অধিনায়ক আস্থা রাখেন দলের সেরা বোলার মুস্তাফিজের ওপর। কাটার মাস্টার প্রতিদানও দিলেন হাতে-নাতে। মাত্র এক চারের মারছাড়া ওভারটিতে টানা চার বল ডট। কি অসাধারণ বোলিং!


তবে তৃতীয় ওভারে মারকুটে জ্যাকসকে আটকাতে পারলেন না ক্যারিবীয় কিংবদন্তী বোলার সুনীল নারিন। চার-ছক্কার অসাধারণ ডিসপ্লেতে  চলতি টুর্নামেন্টে ৪১৪ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের আসনে বসেন ইংলিশ এ ব্যাটার। ১১ম্যাচ খেলে ৪৬ গড়ে ৪১৪রান করেছেন। সর্বোচ্চ ইনিংস ৯২। পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস রয়েছে চারটি। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ১৫৬.২২।


চট্টলার এ ওপেনার আসরের শুরু থেকেই ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায়। তবে সবশেষ ম্যাচে পেটের পীড়ার কারণে টিমের সঙ্গে মাঠে এসেও ভগ্নহৃদয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। খেলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লার বিপক্ষে একাদশে ফিরেই  রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছেন। তবে এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ৯ বলে ১৬রান করে শহিদুলের বলে কায়েসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন।  


জ্যাকসের বিদায়ের পরই যেন পথ হারিয়ে ফেলে চট্টগ্রাম। আগের ম্যাচে ৮৯ রানের অনবদ্য ইনিংসে দলকে জেতানো চ্যাডউইক ওয়ালটন এদিন খেলতে পারলেন কেবল ৩ বল। রান করেছেন ২। তানভীর ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন।


ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারটা আরও দুঃস্বপ্ন হয়ে আসে চট্টগ্রামের জন্য। অন্যদিকে স্বপ্নের মতো এক ওভার মঈন আলীর জন্য। প্রথম বল ডট দেওয়ার পর পরপর দুই উইকেট। হ্যাটট্রিক না হলেও মেইডেন ডাবল উইকেট পান এ ইংলিশ অলরাউন্ডার। 


মজার এক তথ্য, কুমিল্লা পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ছয় জন বোলারকে ব্যবহার করেছে। পাওয়ার প্লে শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান। শুধু এটাই নয় সবশেষ ১৫ বলে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেয় কুমিল্লার বোলাররা।