প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:৩
চেক জালিয়াতি করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ’র বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক অঞ্চল) আদালত। রোববার এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদী শহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ফজর আলী। বাদীর পক্ষে মামলাটিতে সাক্ষী হয়েছেন খোদ আসামি জাকির শাহ’র ভাই সবির আহমেদ জামান।
এ দিকে জাকির শাহ’র নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি আদালত থেকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে গতকাল দিনভর শহর ও বন্দর এলাকায় ছিল আলোচনা সমালোচনার ঝড়। মামলার বিবরণে জানা গেছে, পারস্পরিক সুসম্পর্কের সুবাদে একসঙ্গে ব্যবসা করার লক্ষ্যে পীর জাকির শাহ ব্যবসায়ী ফজর আলীকে ৮ কোটি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ব্যবসার উদ্দেশে সেই ৮ কোটি টাকা দেয়ার বিপরীতে ব্যবসায়ী ফজর আলীর কাছ থেকে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা এবং ৬টি চেক গ্রহণ করেন।
অঙ্গীকারনামা ও চেকের বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রদান করেন পীর জাকির শাহ। পরবর্তীকালে আর টাকা দিতে পারবে না বলে জানালে ফজর আলী টাকা ফেরত দেয়। ওই সময় স্ট্যাম্প ও ৩টি চেক ফেরত দিলেও বাকি ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানান পীর জাকির শাহ। ওই সময়ে স্ট্যাম্পের পেছনে চেক নম্বর উল্লেখ করে হারানো ৩টি চেক বাবদ কোনো দাবি-দাওয়া নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেন এবং পরবর্তীকালে খুঁজে পেলে ফেরত দিবেন বলে অঙ্গীকার করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর ব্যবসায়ী ফজর আলী জানতে পারেন ওই চেক হারানো যায়নি এবং এগুলো নিয়ে পীর জাকির শাহ টাকা দাবি করার ষড়যন্ত্র করছেন।
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে পীর জাকির শাহ এবং সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুকে খাওয়ানোর পর চেক ফেরতের বিষয়ে কথা বললে পীর জাকির শাহ ও সহযোগী বাবু ৫ কোটি টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী ফজর আলী বাদী হয়ে কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ ও তার সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক অঞ্চল) আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। ২৬ জানুয়ারি রোববার আদালত পীর জাকির শাহ’র নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ব্যাপারে পীর জাকির শাহ’র মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী ফজর আলী জানান, একজন পীর হিসেবে আমি তাকে যথেষ্ট বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করতাম। সরল বিশ্বাসে আমি কোনো টাকা না পেয়েই ৮ কোটি টাকার স্ট্যাম্প ও চেক ওনাকে দিয়েছি। পরে উনি ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়ে আর দিতে পারবে না বলে জানায়। তখন এই টাকায় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য সফল হবে না বলে টাকা ফেরত দেই। উনিও আমাকে স্ট্যাম্প ও ৩ কোটি টাকার ৩টি চেক ফেরত দিয়ে বাকি ৫ কোটি টাকার ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানায়।
ইনিউজ ৭১/এম.আর