০২-০৪ এর বন্ধুরা সাহায্যে ‌এগিয়ে আসো,বিশ্বাস করো দিন বদলাবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২৩শে মার্চ ২০২০ ০৮:১৭ অপরাহ্ন
০২-০৪ এর বন্ধুরা সাহায্যে ‌এগিয়ে আসো,বিশ্বাস করো দিন বদলাবে।

আমরা সকলেই এখন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। সারা বিশ্বজুড়ে যে মহামারীর প্রকোপ তা এখন বাংলাদেশেও বিদ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের সেবা দিতে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজ কি! স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে কারা যাচ্ছে! স্বাস্থ্যকর্মীরা কাদের সেবা দিচ্ছে! সেবা দিতে না পারলে অবস্থাটা কি দাঁড়াবে! এগুলো আমাদের বুঝতে হবে। সময় এবং সুযোগ থাকলে একজন স্বাস্থ্য কর্মী বা ডাক্তার বা নার্স হাজার রোগীকে ও সেবা দিতে পারে।কিন্তু এরা না থাকলে রোগীরা বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে। এই সহজ বিষয়টাই আমাদের অনুধাবন করতে হবে। বর্তমান রোগটি এমন একটি রোগ যা একে অপরের সংস্পর্শে এলেই ছড়িয়ে যাচ্ছে।

যেহেতু বাংলাদেশে এখন বর্তমানে পর্যাপ্ত টেস্টিং কিট নেই রোগীরা আক্রান্ত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে যাচ্ছে এবং তা আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে যাচ্ছে। যাওয়াটাই খুব সহজ।ডেল্টা হাসপাতালে ঘটনাটা আমরা সকলেই শুনেছি।সেখানে অজ্ঞাত রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে ডাক্তার নিজেই আক্রান্ত। ডাক্তার সাহেব অজ্ঞানে হোক বা পর্যাপ্ত প্রটেকশনের অভাবেই হোক তিনি এখন ভুক্তভোগী।এমন  পরিস্থিতিতে আমাদের আগে বুঝতে হবে সবার প্রথমে আমাদের কি প্রয়োজন প্রটেকশন টা প্রথমে আমাদের কোথায় দরকার। 

আমরা ০২-০৪ বাংলাদেশ এর বন্ধুরা সমস্যাটা উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আমরা ডাক্তারদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের যেটা করতে হবে সর্বস্তরের বন্ধু দের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা বন্যার্তদের সহযোগিতা করেছি কিছু খাদ্য দ্রব্য দিয়ে যেগুলো দিয়ে অনায়াসেই কিছুদিন হয়তো পার করে দিয়েছে, আমরা শীত বস্ত্র দিয়েছি গরীব লোকদের, একটি শীতবস্ত্র দিয়ে হয়তো তারা অনায়াসেই কয়েক বছর পার করে দিতে পারবেন, আমরা ঈদে নতুন পোশাক দিয়েছি অবহেলিত শিশুদের ঈদের পোশাক পরে দিনটি হয়তো সুন্দর আনন্দের সাথে পার করে নিয়েছে এবং এখনো হয়তো সে পোশাকটি পরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন, স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য যে প্রটেকশন কিট আমরা দিচ্ছি তা ব্যবহার করা যায় মাত্র কয়েক ঘন্টা, এরপরেই তাদের আবার নতুন করে সেসব লাগছে। তাই এবার সাহায্যের পরিমাণটা অনেক বেশি দরকার। একটা গ্লাভস বা একটা মাস্ক বা একটা পিপি দিলেই আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, পরবর্তী দিন বা ঘন্টার জন্য আমাদের আবার নতুন করে এগুলো সাপ্লাই দিতে হচ্ছে। সুতরাং বুঝতেই পারছ বর্তমান প্রেক্ষাপট আমাদের জন্য কতটা মারাত্মক এবং একই সাথে ভয়ঙ্কর। যতদিন যাবে এসবের ডিমান্ড তত বাড়তেই থাকবে।

আমাদের মানব জাতির স্বভাবজাত চরিত্র হচ্ছে যতদিন না আমরা নিজে বিপদে পড়ছি ততদিন আমরা সে বিপদ উপলব্ধি করতে পারিনা। আজ ডাক্তাররা বিপদে পড়েছে, কাল পরবে চাকরিজীবীরা পশু ব্যবসায়ী, পরে কখনো শিশুরা কখনো ছাত্র-ছাত্রী কখনো শিক্ষক। বিপদে আমরা যে কেউ যখন তখন পড়তে পারি। আর আজ যারা বিপদে পড়ছে কাল তারা সাহায্য প্রার্থী, কাল অন্য কেউ বিপদে পড়বে সাহায্যপ্রার্থী হবে অন্য কেউ।

আজকে অনেকেই অর্থ সাহায্য দিয়ে এগিয়ে এসেছে, অন্যেরা চুপচাপ দেখছে যে কি হচ্ছে। আর যারা সাহায্যে এগিয়ে এসেছে আগামীকাল তাদের বিপদে অন্যদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। আজ‌ই তোমার এগিয়ে আসতে হবে, কাল যাতে অন্য কেউ তোমার বিপদে চুপচাপ বসে না থাকে।

আর দয়াকরে একচেটিয়া সরকারকে গালি দিবেন না, পৃথিবীর সব দেশই এ মহামারি সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা কেউ দেখতে পাই না, তাই ভবিষ্যতের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বোঝা সম্ভব হয় না। অনাগত ভবিষ্যত শুধুমাত্র অনুমান করা যায়, কিন্তু অনুধাবন করা যায় না, ভবিষ্যৎ কেবলমাত্র সে ভবিষ্যতের উপরেই নির্ভর করে। এজন্য মহান গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন, "অতীতে থেকো না, কারণ অতীত কখনো পরিবর্তন করা যায় না। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবো না, কারণ ভবিষ্যৎ আমরা দেখতে পাই না। বর্তমানেই থাকো, বর্তমান নিয়েই ভাবো।"

আর দয়াকরে ব্যবসায়ীদেরকে গালি দিবেন না, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা না করলে আমাদের মালামালের যোগানদাতা বন্ধ হয়ে যাবে। এবং সে অবস্থা হবে আরও ভয়াবহ। মাস্ক হয়তো বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা হয়তো ২৯.৫০ টাকায় কিনে ৩০ টাকাতেই বিক্রি করে ৫০ পয়সা লাভ করছে। বি পজেটিভ প্লিজ। বৃক্ষের ধর্ম যেমন ফল দেয়া, আগুনের ধর্ম যেমন দাহ্য করা, ব্যবসায়ী ধর্ম তেমন ব্যবসা করা। এটাই ধর্ম।

জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে সমস্যা নেই, অর্থ তরল সম্পত্তি। এটি এ পাত্র থেকে সে পাত্র ঘুরে বেড়াবে। কাল আমি আপনি খেতে না পেলে সরকার বা ব্যবসায়ী অর্থ নিয়ে বসে থাকবে না এরাও আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। খেতে না পারলে প্রতিবেশী খাওয়াবে। প্রতিবেশী না পারলে সরকার খাওয়াবে। সরকার না পারলে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র এগিয়ে আসবে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র না পারলে বিশ্ব সংস্থা গুলো এগিয়ে আসবে। না খেয়ে আমরা মারা যাবো না। এ বিশ্বাস আমার উপর রাখতে পারো।

সর্বোপরি আমাদের যা করতে হবে, সর্বস্তরের লোকজনকে এগিয়ে আসতে হবে। যুদ্ধ কখনো চিরস্থায়ী না। যুদ্ধে জয় পরাজয় আছে। মহামারীর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ পুরো মানবজাতির। হয় মহামারী জিতবে না হয় মানব জাতি।