
প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৫৬

পুরো হিন্দুস্থান উপমহাদেশে এখন উল্টাপাল্টা অনেক কিছু চলছে, ---টার্গেট মুসলমান। আসামে এনআরসি বিজেপির জন্যে বুমেরাং হলেও বাদ পড়া ১৯ লাখের মধ্যে ১১ লাখ হিন্দু, ৬ লাখ মুসলমান। তাঁদের আপাততঃ দেশ নেই। কাশ্মীরের মুসলমানদের দেশ আছে অথচ তারা সে দেশ চায়না। বাংলাদেশের সিলেট থেকে খুলনা কেড়ে নেয়ার মূর্খ আওয়াজ দেয় বিজেপি লিডার। রোহিঙ্গারা মায়ানমার দেশের মানুষ অথচ তারা সে দেশে যেতে চায়না।
এশীয় মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলি, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, সারা বিশ্বে যেখানেই মুসলমান, সেখানেই তাঁরা কোণঠাসা ও অত্যাচারিত। সম্প্রতি আমেরিকার বর্ডার থেকে কিছু কানাডিয়ান মুসলমানকেও ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদেরকে ভিসা নিয়ে আসতে হবে। পৃথিবীর সাধারণ মুসলমানদের একমাত্র অপরাধ তাঁরা জন্মগতভাবে মুসলমান এবং তাঁরা ধর্মকর্ম করেন।
কিন্তু ১৪০০ বছর আগে নবী মুহাম্মদ (স:) পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকগুলি ভবিষ্যৎবাণী, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় প্রফেসি করে গেছেন। মুসলমানদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে তাঁর একটি প্রফেসি হাদিস এই রকম। হুজুর (স) বলেন, "অচিরেই প্রত্যেক প্রান্তের জাতিসমূহ তোমাদের (মুসলমানদের) বিরুদ্ধে (অবস্থান নেয়ার জন্য) একে অপরকে ডাক দিবে, যেভাবে তোমরা খাওয়ার মাদুরের উপর বিদ্যমান খাবারের দিকে একে অপরকে ডেকে থাকো। হযরত সওবান বলেন: আমরা জিজ্ঞেস করলাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ ! সেদিন আমরা (মুসলমানরা) কি সংখ্যায় কম হবো?
রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন: সেদিন তোমরা সংখ্যায় অনেক হবে, তবে তোমরা হবে ভাসমান খড়কুটোর মতো। তোমাদের দুশমনের অন্তর থেকে (তোমাদের প্রতি) গুরুত্ব উঠে যাবে। আর তোমাদের অন্তরগুলোর ভিতরে ওয়াহন জন্মে যাবে।
নবী (স)এর প্রফেসি অনুযায়ী "আখেরাতের বিপরীতে পার্থীব বিষয়গুলোকে ভালবাসার কারণে" বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ওপর এইসব সমস্যা আসার কথা ছিল, তাই এসেছে। কিন্তু এর শেষ কবে? আমরা জানিনা। কিন্তু নবী(স)এর প্রফেসির মধ্যে তার জবাব আছে।আমাদের এলাকার সমস্যাগুলি নিয়ে কয়েকটি প্রফেসি হাদিস আছে। তার একটি হচ্ছে--"রাসুলুল্লাহ ﷺ (একবার) হিন্দ-এর উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন: অবশ্যই তোমাদের (মুসলমানদের একটি) সৈন্যদল হিন্দে’র সাথে গাজওয়া (জিহাদ) করবে (এবং) আল্লাহ (তাআলা তোমাদের মুজাহিদগণকে) তাদের উপর বিজয় দান করবেন। এমন কি তারা ওদের রাজাদের (রাষ্ট্রনায়কদের) শিকলে বেঁধে নিয়ে আসবে।
আল্লাহ সেই সেনা দলের সবার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। এরপর তারা (তাদেরকে রেখে) চলে যাবে এবং শাম-এ (গিয়ে) তারা ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.)-এর দেখা পাবে’।(রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর একথা শুনে) হযরত আবু হুরায়রাহ রা. বলেন: আমি যদি (আমার জীবনকালে) সেই গাজওয়া (জিহাদ) পেয়ে যাই, তাহলে আমার নতুন-পুরাতন তল্পিতল্পা সব বিক্রি করে দিয়ে সেই গাজওয়ায় অংশ নিবো। এরপর আল্লাহ তাআলা যখন আমাদেরকে বিজয় দান করবেন এবং আমরা সেখান থেকে ফিরে আসবো, তখন আমি আবু হুরায়রাহ হবো (দোযখের আগুন থেকে) মুক্তিপ্রাপ্ত।

(আহা ! সেই সময়ে আবু হুরায়রাহ’র কি আনন্দ হত, যখন) সে শাম-এ গিয়ে সেখানে ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.)-এর দেখা পেতো! ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার খুব ইচ্ছে হয় তাঁর সান্নিধ্যে যেতে এবং তাঁকে এই খবর দিতে যে আমি আপনার সাহাবী।তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ ﷺ (আমার একথা শুনে) মুচকি হেসে দিলেন, অতঃপর বললেন: এমনটা হবার নয় ! এমনটা হবার নয়’!" সূত্রঃ (আল-ফিতান, নুআইম বিন হাম্মাদ, হাদিস ১২৩৬) (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)এই হাদীসে হিন্দুস্থান ও শাম বা সিরিয়াতে যারা যুদ্ধ করবে তাদের কথা একত্রে উল্লেখ করার কারণে আলেমগণ একমত উভয় যুদ্ধ হবে সমসাময়িক।আশ্চর্যজনক ও কল্পনাতীত ভাবে সিরিয়ার যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি আর হিন্দুস্থান উপমহাদেশে
কিছু সম্ভাব্য পারমানবিক সিরিয়াস যুদ্ধের কথা শোনা যাচ্ছে রাষ্ট্র নায়ক এবং মন্ত্রীদের হুঙ্কারে। এই হাদিসে আরো একটি ব্যাপার পরিষ্কার বোঝা গেল,গাজওয়াতুল হিন্দ হবে ঈসা (আঃ) এর আগমনের সমসাময়িক সময়ে। অতএব "গাজওয়াতুল হিন্দ"এখনো হয়নি। মুহাম্মদ বিন কাসেমের ভারত বিজয় সেই গাজওয়া নয়।গাজওয়াতুল হিন্দ" কি রকম হবে? তা নিয়ে নবী(স) আরো একটি প্রফেসি হাদিস।"রাসূল (স:) একদিন পুর্ব দিকে তাকিয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছিলেন এমন সময় এক সাহাবী রাসূল (স:) কে জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনি এমন করছেন কেন। রাসূল (স:) বললেন আমি পুর্ব দিকে বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছি।
সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনি কিসের বিজয়ের গন্ধ পাচ্ছেন।রাসূল (স:) বললেন পুর্ব দিকে মুসলিম ও মুশরিকদের (যারা মুর্তিপুজা করেন) সাথে যুদ্ধ শুরু হবে। যুদ্ধটা হবে অসম। মুসলিম সেনাবাহিনী থাকবে সংখ্যায় সীমিত কিন্তু মুশরিক সেনাবিহিনী থাকবে সংখ্যায় অধিক।ঐ যুদ্ধে মুসলিমরা এত বেশি মারা যাবে যে রক্তে মুসলিমদের পায়ের টাখনু পর্যন্ত ডুবে যাবে। ঐ যুদ্ধে মুসলিমরা তিন ভাগে বিভক্ত থাকবে: এক ভাগ বিশাল মুশরিক বাহিনী দেখে ভয়ে পালিয়ে যাবে তারাই হলো জাহান্নামী। আর এক ভাগ সবাই যুদ্ধে শহীদ হবেন।
শেষ ভাগ আল্লাহর ওপর ভরসা করে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং শেষ পর্যন্ত জয় লাভ করবেন।নবীজি মুহাম্মদ (স:) বলেন, এই যুদ্ধ বদর যুদ্ধ সমতুল্য।তিনি আরো বলেছেন ঐ সময় মুসলিমরা যে যেখানেই থাকুক না কেন তারা যেন সেই যুদ্ধে শরিক হন।সূত্র: (ইবনে নাসায়ী খন্ড ০১,পৃষ্টা ১৫২। সুনানে আবু দাউদ খন্ড ০৬,পৃষ্টা ৪২।)নবী (স) এর প্রফেসি সত্যি হতেই হবে একদিন যেভাবে আগে বলা সবগুলি প্রফেসি সত্যি হয়েছে অতীতে সেইভাবে। এই হাদিসে বর্ণিত বিপুল সংখ্যক মুসলমানদের টাখনু পর্যন্ত রক্তের মৃত্যু হবে সম্ভবতঃ পারমানবিক যুদ্ধের মাধ্যমে। এজন্যেই হিন্দুস্থানে এত বেশি মুসলমানদের মৃত্যুর কথা নবী(স) বলে গিয়েছেন।