নানা বিতর্কের জন্ম দেয়া সেই ইস্কন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার ২৫শে নভেম্বর ২০২৪ ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
নানা বিতর্কের জন্ম দেয়া সেই ইস্কন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার

সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে। 


গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ৮ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম ও রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছু সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসব সমাবেশে সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দাবি তোলা হয়, যা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। 


এদিকে, গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের হয়। মো. ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এই মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার হন রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ। 


চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, যিনি পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ এবং বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক চন্দন কুমার ধর, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারীসহ আরও ১৭ জন। এদের মধ্যে কয়েকজন আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।


বিশ্লেষকদের মতে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে সনাতনী সম্প্রদায়ের দাবির প্রতি সরকারের প্রতিক্রিয়া নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি সনাতন ধর্মের পক্ষে একাধিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এবং সম্প্রতি রংপুরে একটি বৃহৎ সমাবেশেও অংশগ্রহণ করেন, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী বাধা দেয়। এই সমাবেশের পর থেকে তিনি এবং তার অনুসারীরা প্রশাসনের নজরে আসেন।


চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে চিন্ময় প্রভু নামে পরিচিত এবং তিনি নিজেকে ধর্মীয় ও সামাজিক আন্দোলনের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার গ্রেপ্তারকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তার সমর্থকরা অভিযোগ করছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সমাবেশের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। 


এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাবি করছে যে, জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এ গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি পদক্ষেপ।