‘জমিদার ফজলি আম ’। কথাটি শুনলেই কেমন একটা আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বরগুনার পাথরঘাটা গ্রামের বেকার যুবক রাসেল মিয়া পাথরঘাটার হাতেমপুর গ্রামের এখন আলোকরশ্মি। তারই হাতেগড়া আয়াতুল্লা এগ্রিকালচার ফার্মের বাগানটিতে ৪ কেজি ওজনের ‘জমিদার ফজলি আম ’ দেখতে এখন প্রতিদিন ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
এখানে আমের পাশাপাশি রয়েছে ত্বীন ফল, পাচিমন ফল, ড্রাগন, আলুবোখারা, মালটা ,করোছল, পেয়ারা ,মৌ বাতামি, শরিফাসহ অনেক বাহারি রঙের ফল।
জেলার পাথরঘাটা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে সদর ইউনিয়নের উত্তর হাতেমপুর গ্রাম। ফার্মটির মালিক আসাদুজ্জামান রাসেল ওই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। রাসেল উচ্চশিক্ষা শেষ করে কৃষি উদ্যোক্তা হন।
বাগানের মালিক রাসেল জানান, তার বাবার ২৬ বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো চাষ শুরু করেন ড্রাগন ফল। ৩ বছর ধরে এই ফল বিক্রি করে বেশ লাভবান তিনি। এরপর তিনি আর পিছনে ফিরে তাকাননি।
ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলজ বাগান তৈরিতে কাজ শুরু করেন। এখন তার বাগানে অনেক জাতের ফল ধরেছে। এসবের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে আনা ৮টি উন্নত জাতের আম গাছে অসংখ্য আম ধরেছে।
আম গাছগুলো সাইজে ছোট। প্রতিটি গাছে প্রায় ৩০/৪০টি আম ধরেছে। ফজলি জাতের এই আমগুলো প্রতিটি ৪ থেকে সাড়ে ৪ কেজি ওজনের হয়েছে। আমগুলো এখনো কাঁচা, আম জাল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ কেজি আম বিক্রি করেছেন।
কৃষি উদ্যোক্তা রাসেল জানান, লেখাপড়া শেষ করে দীর্ঘ সময় বেকারত্বের অভিশপ্ত জীবন কাটাতে হয়েছে। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে মুঠোফোনে নেট-দুনিয়ার খবরাখবর ঘেটে দেখতাম।
বিশেষ করে ইউটিউব চ্যানেলে কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন দেখা ছিল আমার নিত্যদিনের কাজ । এই দেখাদেখি থেকেই শখ করে ড্রাগন চাষ শুরু করি। এখান থেকে লাভবান হওয়ায় পাশাপাশি অন্যান্য ফলের চাষাবাদ শুরু করে দেই। এই মৌসুমে অনেক টাকার ফল বিক্রি করেছি। অনেক ফল এখনও পাকেনি।
এই প্রসঙ্গে পাথরঘাটার গণমাধ্যমকর্মী আমিন সোহেল বলেন,লেখাপড়া শেষ করেই মানুষ চাকরির পিছনে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ায়। দেশে তো অসংখ্য শিক্ষিত বেকার। এত চাকরি কোথায় পাবে সরকার? বিভিন্ন সেক্টরে আমাদের উদ্যোক্তা হওয়া দরকার। খুবই দরকার। রাসেল চাকরি খুঁজেননি। বেকার জীবন কাটিয়ে এখন লাভের মুখ দেখছেন তিনি। এ কারণে বাণিজ্যিকভাবেই এই ফার্মটি করছেন তিনি।
পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল জানিয়েছেন, হাতেমপুর গ্রামের রাসেল এই অঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। এই অঞ্চলে এ ধরনের ফল বাগান আর কোথাও দেখা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই এমন চাষে অনেক পরিবার উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।