বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য আরও ১০০ পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে সোমবার (৭ এপ্রিল) বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এর আগে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রত্যাহার করেছে, তার পর থেকেই বাংলাদেশের সব রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড় ৬ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। বিশেষত কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য এবং এক শতাংশ।

এছাড়া, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্প চলমান। অথচ, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য এবং আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) অনুযায়ী, উভয় দেশ বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা দূর করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সবসময় গঠনমূলক সংলাপ এবং সহযোগিতায় বিশ্বাসী, এবং যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে, তা দূর করতে প্রস্তুত।

এছাড়া, বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, সয়াবিন, গম, তুলা আমদানির উদ্যোগ এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে মার্কিন বিনিয়োগ উৎসাহিত করার চেষ্টা করছেন। এসব পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য আনতে সহায়ক হবে এবং উভয় দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।