নবীকে অবমাননার অভিযোগে পুলিশ চিকিৎসককে গুলি করে হত্যা করলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:৪২ অপরাহ্ন
নবীকে অবমাননার অভিযোগে পুলিশ চিকিৎসককে গুলি করে হত্যা করলো

পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে একজন চিকিৎসককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। 


শাহ নওয়াজ নামে ৩২ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক সিন্ধু প্রদেশের অমরকোট জেলার প্রধান সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতে তিনি ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট শেয়ার করার অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। অভিযোগ উঠেছে, নওয়াজ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে অপমান করেছেন। এরপর গত মঙ্গলবার তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। 


তবে নওয়াজ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দাবি করেছেন যে ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি তার নয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং শহরজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা নওয়াজকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকেন।


স্থানীয় পুলিশ প্রধান নিয়াজ খোসো জানিয়েছেন, নওয়াজ এবং তার এক সহযোগী পালানোর চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ তাদের থামানোর জন্য সংকেত দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। পাল্টাপাল্টি গুলিবিনিময়ের এক পর্যায়ে নওয়াজ নিহত হন। 


এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে নওয়াজের হত্যার জন্য তাদের প্রশংসা করছেন। 


এটি প্রথমবার নয়; এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে থানার ভিতরে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। 


এই ঘটনার পর থেকে পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননা নিয়ে আলোচনা এবং প্রতিবাদের ঝড় বয়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সহিংসতা ধর্মীয় উগ্রপন্থার চরম দৃষ্টান্ত এবং এটি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন করতে পারে। 


সাম্প্রতিক এই ঘটনা পাকিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতি একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন ফেলে দিয়েছে। দেশে ধর্মের নামে সহিংসতা এবং অবিচারের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান জানাচ্ছেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো।