বালিয়াডাঙ্গীতে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি অভিভাবকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ ইলিয়াস আলী - জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: বুধবার ৮ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:১৭ অপরাহ্ন
বালিয়াডাঙ্গীতে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি অভিভাবকদের

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ভুঁইফোড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ এবং সরকারি অর্থ অপচয় রোধের দাবিতে ভুক্তভোগী অভিভাবকগণ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চারণ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী হলরুমে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন অভিভাবক, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী অভিভাবক মকবুল হোসেন অভিযোগ করেন যে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ভুঁইফোড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছয় থেকে দশম শ্রেণির বই বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নাম সরকারি অনুমোদিত (এমপিওভুক্ত) প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করা হলেও একই শিক্ষার্থীদের নামে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানেও বই বিতরণ করা হচ্ছে। এতে একজন শিক্ষার্থীর জন্য সরকারকে দুটি সেট বই বিতরণ করতে হচ্ছে, যার একটি ব্যবহারই হচ্ছে না। এই অপচয়ের কারণে সরকারকে অতিরিক্ত বই ছাপাতে হচ্ছে, যা রাজস্ব খাতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি করছে।


মকবুল হোসেন আরও জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অনেক অননুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মদদে পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কিছু ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি পেলেও তারা নিয়ম ভেঙে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করছে। তিনি এসব প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ ঘোষণা করে তাদের কার্যক্রম দ্রুত বন্ধ করার দাবি জানান।


এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের মাধ্যমে পাঠদান করানোর ফলে শিক্ষার গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত কোচিং সেন্টারের আদলে পরিচালিত হলেও বিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে শিক্ষা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। মকবুল হোসেন বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান আর্থিক এবং সামাজিকভাবে কোনো জবাবদিহিতা ছাড়াই ব্যাপক হারে টিউশন ফি আদায় করছে এবং অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জন করছে।


সংবাদ সম্মেলনে বালিয়াডাঙ্গী ল্যাবরেটরি স্কুলের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এটি একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত দাবি করা হলেও অভিভাবকদের অভিযোগ, এখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ফি আদায় করা হচ্ছে। ট্রাস্টের টাকায় পরিচালিত হলে এত বেশি ফি নেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।


ভুক্তভোগী অভিভাবকগণ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম খতিয়ে দেখার এবং অবৈধভাবে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।


সংবাদ সম্মেলনে বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এনএম নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জীবন এবং সিনিয়র সাংবাদিক হারুন অর রশিদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।