চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি না হলে বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধ- বিজেপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর ২০২৪ ১১:০২ পূর্বাহ্ন
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি না হলে বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধ- বিজেপির

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ইসকন নেতা ও সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিজেপি সরকার তার মুক্তি দাবি করেছে। বিজেপির নেতারা বলছেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর অত্যাচারের অংশ হিসেবে ঘটেছে এবং এটি আরও বড় আকারে ধর্মীয় দমন-পীড়নের একটি উদাহরণ।


২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, "যদি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে আগামীকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের সনাতনীরা বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধ করবে। আমরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে কোন পরিষেবা প্রবাহিত হতে দেব না।" তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন সহ্য করা হবে না।"


চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করা হয় ২৫ নভেম্বর দুপুরে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে হেফাজতে নেয় এবং পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারের পর, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশে হিন্দুদের একমাত্র সুরক্ষা প্রদানকারী নেতাদের একজন। তাকে গ্রেপ্তার করা সরকারের এক অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ।"


উল্লেখ্য, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল গত অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে জাতীয় পতাকা অবমাননা করার। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ অক্টোবর সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশে এই বিতর্কিত ঘটনাটি ঘটে, যার পরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে লক্ষ্য করে অভিযোগ ও মামলা দায়ের করা হয়।


চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবাদ জানায়। সম্প্রতি, ইসকন বাংলাদেশও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহিষ্কার করেছে, যা আরও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।


এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেছেন যে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর চাপ সৃষ্টি ও তাদের নিপীড়ন চলছে। শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, "বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সনাতন ধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতা হারিয়ে ফেলেছে এবং তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে।" তিনি কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের হুমকিও দিয়েছেন।


চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের ঘটনাটি একটি আন্তর্জাতিক সংকটের রূপ নিতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায় এবং ভারতীয় পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।